চোরাগোপ্তা: গ্রামে বিক্রি হচ্ছে কচ্ছপ। নিজস্ব চিত্র
শীত পড়তেই শুরু হয়েছে কচ্ছপের মাংসের বেআইনি কেনাবেচা। পুলিশ-প্রশাসনের নজর এড়িয়ে হিঙ্গলগঞ্জ ও হাসনাবাদ থানা এলাকায় এমনকী হোম ডেলিভারিও পাওয়া যাচ্ছে কচ্ছপ।
হাসনাবাদ থানার বিশপুর পঞ্চায়েতের বিশপুরে দেখা মিলল ন্যাজাটের এক কচ্ছপের কারবারির। বাইক নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে কচ্ছপ বিক্রি করে সে। ওই কারবারির কথায়, ‘‘ব্যবসায়ীরা বসিরহাটে গোপন জায়গায় কচ্ছপ রাখছে। সেখান থেকে কিনে এনে আমি রেখেছি বাড়িতে। রোজ কুড়ি-পঁচিশটা করে বিক্রি করি এ দিক ও দিক গিয়ে।’’ ফোন করলেও বাড়িতে কচ্ছপ পৌঁছে দিচ্ছে বলে জানায় সে। ওই কারবারির দাবি, ‘‘কারবারটা বেআইনি, সেটা জানি। তবে পুলিশকে কিছু টাকা দেওয়া আছে। তাই আর কোনও ঝুটঝামেলা নেই।’’ বিশপুর পঞ্চায়েতের বায়লানি বাজারে সোম ও শুক্রবার হাটবারে প্রকাশ্যেই কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে। বরুণহাটের দিক থেকে একজন কচ্ছপ বিক্রি করতে আনে বলে জানা গেল। বাজারের এক ক্রেতা বলেন, “আমাদের মতো কয়েকজনকে বিশ্বাস করে ফোন নম্বর দিয়ে রেখেছেন ওই ব্যবসায়ী। ফোন করলে কচ্ছপ চলে আসে। কেজি প্রতি দাম পড়ে ৬০০-৭০০ টাকা।”
বরুণহাটের বিভিন্ন পাড়ায়, কাটাখালি বাজারের আশপাশে শীত পড়তেই কচ্ছপ বিক্রেতাদের দেখা যাচ্ছে বলে জানালেন গ্রামের মানুষ। হাসনাবাদের বিভিন্ন মাছ বাজারে আড়াল-আবডালে কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পুলিশ কী করছে?
হাসনাবাদ থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, “নির্দিষ্ট তথ্য পেলে গ্রেফতার করা হবে অবৈধ কারবারিকে।” পুলিশকে টাকা দিয়ে কারবার চালানোর অভিযোগ মানেননি তিনি। হিঙ্গলগঞ্জ বাজারেও এক মাছ বিক্রেতার কাছে কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিছু বাড়তি টাকা দিলে মাংস কেটেও দেওয়া হয়।
হিঙ্গলগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বিষয়টি মেনে নিচ্ছেন। তাঁর কথায়, “হিঙ্গলগঞ্জ বাজারে কচ্ছপ বিক্রি হল একটা ওপেন সিক্রেট। সকলেই সব জানে।”
দুলদুলি ফেরিঘাটের পাশে রাস্তার ধারে বসে কচ্ছপ বিক্রি করতে দেখা গেল কয়েকজন মাছ কারবারিকে। বাঁকড়া বাজারে ভান্ডারখালি এলাকাতেও কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে।
হিঙ্গলগঞ্জ থানার ওসি অনিল সাউ বলেন, “এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনও খবর নেই। আমরা নজর রাখছি। দেখতে পেলেই গ্রেফতার করা হবে।”