থমকে: পরিকল্পনা থাকলেও সংস্কার হয়নি বাঁধ। গোসাবা ব্লকের রাঙাবেলিয়া এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
বর্ষার আগে এলাকার বিভিন্ন বাঁধ মেরামতির জন্য অর্থ বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছিল। মাত্র একটি বাঁধ সারাইয়ের অনুমোদন মেলে। অভিযোগ, টাকার অভাবে সেই কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় দিন কাটছে মানুষের। এমনই পরিস্থিতি বাসন্তীর মসজিদবাটি পঞ্চায়েত এলাকায়।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে দীর্ঘদিন ধরে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। তার জেরে গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নের বহু কাজই আটকে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, মসজিদবাটিতে বেশ কয়েকটি এলাকায় নদীবাঁধ বেহাল। টাকার অভাবে সংস্কার হচ্ছে না। পঞ্চায়েতের তরফে বর্ষার আগেই দশটি এলাকায় বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ মেরামতির জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে অর্থ বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছিল। দশটি বাঁধের মধ্যে একটি মাত্র বাঁধ মেরামতির অনুমোদন আসে। কিন্তু রামগোপালপুর এলাকায় সেই বাঁধ মেরামতির জন্য অনুমোদন মিললেও পঞ্চায়েতের তরফে সেই কাজ করা হয়নি।
উপপ্রধান গৌর সর্দার বলেন, “ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াই কোটি টাকার কাজ হয়েছে। সেই টাকা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া রয়েছে। শ্রমিকেরা মাঝে মধ্যেই টাকার জন্য পঞ্চায়েতে, প্রধান, উপপ্রধানের বাড়িতে এসে ঝামেলা করছেন। রাস্তায় বেরোনো যাচ্ছে না। টাকা না মিললে নতুন করে কাজ করা সম্ভব নয়।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পঞ্চায়েতের এক কর্মী বলেন, “নদীবাঁধগুলির সত্যিই খুব খারাপ অবস্থা। এ বছর এখনও বৃষ্টি কম বলে সমস্যা হয়নি। বেশি বৃষ্টি হলে বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় এলে বাঁধ রক্ষা করা মুশকিল।”
টাকার অভাবে এই পঞ্চায়েতে সাতটি খাল সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে। একাধিক রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে খেলার মাঠের সংস্কারের কাজ।
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, মোট চার হাজার শ্রমিকের জব কার্ড রয়েছে এলাকায়। তার মধ্যে আড়াই হাজার শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। কিন্তু একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছে পরিবারগুলি। গ্রামে কাজ না পেয়ে ফের ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা মধুসূদন সর্দার বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে কাজের বকেয়া টাকা পাচ্ছি না। তা ছাড়া, নতুন কাজও কিছু নেই। পঞ্চায়েতে গেলে বলছে সরকার টাকা দিচ্ছে না। এ ভাবে চললে আমাদের কী করে চলবে বলুন তো? বাধ্য হয়েই কাজের জন্য অন্য রাজ্যে যেতে হবে।” ইতিমধ্যেই এই পঞ্চায়েত এলাকা থেকে কয়েকশো মানুষ কাজের জন্য ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
বাসন্তীর অন্যান্য পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও রয়েছে একই সমস্যা। বিডিও সৌগতকুমার সাহা বলেন, “গোটা ব্লকেই এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ। সমস্যা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু টাকা আসা শুরু হলে সমস্যা মিটে যাবে।”