ফাইল চিত্র।
কখনও ফোন পাওয়া যাচ্ছে না। কখনও রিং হয়ে হয়ে কেটে যাচ্ছে ফোন। ‘দিদিকে বলো’ হেল্প লাইন নম্বরে ফোন করে করে ক্লান্ত বসিরহাটের বহু মানুষ। ফোনের ও প্রান্ত থেকে সাড়াশব্দ মিলছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। যাঁরা লাইন পেয়েছেন, তাঁদেরও ক্ষোভ জানানোয় বিশেষ সুবিধা হয়নি বলে জানালেন অনেকেই।
হাসনাবাদের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী সুশান্ত ঘোষ মজুমদার হিঙ্গলগঞ্জের কাজল মুখোপাধ্যায়, স্বরূপনগরের ঋজু দাসরা বলেন, ‘‘প্রথমে যখন জানলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভাব-অভিযোগের কথা সরাসরি জানানো যাবে তখন খুবই ভরসা পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, যাক এ বার হয় তো ক্ষোভ সঠিক জায়গায় জানাতে পারব। কিন্তু ফোনই পাচ্ছি না।’’ শ্রেয়া গঙ্গোপাধ্যায়, রূপম ইসলাম, দীনেশ ভট্টাচার্যদের বক্তব্য, ‘‘জমির রেকর্ড নিয়ে দুর্নীতি, আর্থিক প্রতারণা, গ্রামের পরিকাঠামোর সমস্যার কথা দিদিকে বলো নম্বরে জানিয়েছি। তবে ফল হয়নি।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘এ সব না করে বরং স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানালে হয় তো দ্রুত পদক্ষেপ করা যেত।’’
নেতারা যে ভাবে উপর মহলের নির্দেশে জনসংযোগে যাচ্ছেন, তা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বসিহাটের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরাই যদি অভিযোগ শুনতে আসেন— তা হলে কি সত্যি কথাগুলো বলা যাবে! ভয়ে অনেকেই মুখ খুলছেন না।’’
বিজেপির বসিরহাট জেলার সভাপতি গণেশ ঘোষ বলেন, ‘‘বেশিরভাগ মানুষ ফোনে লাইনই পাচ্ছেন না। যাঁরা কথা বলতে পেরেছেন, তাঁরা বলছেন দিদিকে বলেও কিছুই হল না। আসলে দিদি কারও কথা শোনা পছন্দ করেন না।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য এটা ছিল প্রশান্ত কিশোরের দেওয়া একটা টোটকা। কিন্তু বাংলার মাটিতে সেই টোটকা কাজে এল না। উল্টে মানুষ আরও বিরক্ত হলেন।’’ সিপিএম নেতা শ্রীদীপ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘দিদিকে বলো আসলে ছিল মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার একটা কর্মসূচি। এখানে ফোন করে কেউ কোনও উপকার পেয়েছেন বলে তো শুনিনি!’’
তবে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি সফল বলে দাবি করেছেন হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বলি জনগণের সরকার। কিন্তু জনগণের মতামত সরাসরি নেওয়ার কথা কেউ ভাবেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা ভেবেছেন।’’
তাঁর দাবি, বহু মানুষের অভাব-অভিযোগের সুরাহা হয়েছে ফোন করে। অনেকের সমস্যা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।