Coronavirus in West Bengal

ভিড় বাড়ল, আতঙ্ক রইল

সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লক অফিসে সোমবার ৯০শতাংশের বেশি কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০২:৫৩
Share:

ঠাসাঠাসি: ভিড়ের মধ্যে যাতায়াত। ব্যারাকপুরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

লকডাউন শুরুর সময়েই রাস্তার ভিড় প্রশ্ন উঠেছিল বিস্তর। লকডাউন শিথিল পর্বের শুরুতেই ফিরে এল সেই চেনা ভিড়। অফিস কাছারিতে হাজিরা বাড়ল সোমবার। গণপরিবহণ অবশ্য এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তবে এটুকু বাদ দিলে অন্যত্র এখনও সাবধানতার ছবি চোখে পড়েছে। দু’-একটি জায়গা ছাড়া মোটের উপর আবাসিক হোটেল বন্ধই রয়েছে। রেস্তঁরা খুললেও বিধি মেনে চলার ছবি ধরা পড়েছে সেখানে। আদালতে এ দিন কাজ শুরু হয়নি দুই জেলার কোথাও। বিধি মেনে ধর্মীয় স্থান খুললেও ভিড় ছিল না। দুই জেলার আমপানের তাণ্ডবে দুই জেলার পর্যটন পরিকাঠামো কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তবে লকডাউন এ ভাবে তুলে দেওয়ার ফলে সংক্রমণ বাড়বে কিনা, তা নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে সর্বত্রই।

Advertisement

সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লক অফিসে সোমবার ৯০শতাংশের বেশি কর্মী উপস্থিত ছিলেন। মিনাখাঁ ব্লকে সরকারি নিয়ম মেনে ৭০শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস চলছে। যাঁদের দূরে বাড়ি, অফিসেই তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দূরের কর্মীদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই অবস্থা হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকেও। বনগাঁর অফিসগুলি সরকারি নিয়ম মেনেই ৭০ শতাংশ কর্মী দিয়ে চলছে। একই অবস্থা বসিরহাট ব্যারাকপুরেও। ঝড় কবলিত এলাকাগুলিতে ব্লক এবং পঞ্চায়েত অফিসে ভিড় ছিল ভালই। অন্যত্র কর্মীরা এলেও লোকজন বিশেষ ছিল না। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল এবং বনগাঁয় প্রায় সব বড় রেস্তোরাঁয় খুলেছে। সেগুলির অন্দরসজ্জা বদলানো হয়েছে। দূরত্ববিধি মেনে টেবিল-চেয়ার রাখা হয়েছে। তবে সেখান থেকে রান্না করা খাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে।

ভাঙড় ১, ২, ক্যানিং ২ ব্লক এলাকার সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস, দোকান-বাজার খুলে গিয়েছে। অধিকাংশ সরকারি অফিসে কর্মীদের হাজিরা ছিল ৯৫ শতাংশের বেশি। অফিসগুলিতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দূরত্ব বিধি মেনে বসার ব্যবস্থা হয়েছে তাঁদের। ক্যানিং ২ ব্লকের বিডিও প্রণবকুমার মণ্ডল জানান, অফিসগুলিতে কর্মীদের হাজিরা ছিল প্রায় একশো শতাংশ। অফিসে নিয়ম মানা হলেও বাজারের ঢিলেঢালা অবস্থা সেই একই রকম। সেলুন বা অন্যান্য দোকানে সুরক্ষা বিধির কোন বালাই নেই।

Advertisement

ক্যানিং, বাসন্তী ও গোসাবা এলাকায় সরকারি সব অফিসই বেশ কিছুদিন আগে থেকেই খুলেছে। সোমবার থেকে কর্মীদের সংখ্যা বেড়েছে। দূরত্ব বিধি মেনেই সেখানে কাজ শুরু করেছেন কর্মীরা। বেসরকারি অফিসগুলিতে ও সোমবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে জোর কদমে। সরকারি অফিসের তুলনায় বেসরকারি অফিসে উপস্থিতির হার বেশি ছিল। ক্যানিং শহরে যে দু একটি রেস্তঁরা রয়েছে, সেগুলির কয়েকটি এদিন খুলেছে। জয়নগরে দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে বেশ কয়েকদিন ধরেই। এদিন সরকারি বেসরকারি অফিসে কাজ শুরু হয়েছে। তবে ট্রেন না চলায় বাইরের কর্মীদের আসতে সমস্যা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রের খবর। খুলেছে পুরসভাও। বাইরে থেকে যারা আসছেন, তাঁদের ৭০ শতাংশ হাজিরা থাকলেই হবে বলে জানিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ।

ঝড়ে বিপর্যস্ত দুই ২৪ পরগনা। বিধ্বস্ত সুন্দরবন। সব এলাকায় এখনও বিদ্যুত ফেরেনি। এই অবস্থা সুন্দরবন এলাকার পর্যটন কেন্দ্রগুলি সোমবার বন্ধই ছিল। সরকারি-সরকারি কোনও পর্যটন আবাসই খোলেনি। বনগাঁর গাইঘাটার বিভূতিভূষণ পারমাদন অভয়ারণ্যও বন্ধ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আপাতত সেটি খোলার কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। উত্তর ২৪ পরগনার টাকিতে আটটি হোটেল-গেস্ট হাউস খুলেছে। সেগুলিতে ৭০-৮০ জন অতিথি রয়েছেন। তবে সকলেই ত্রাণ বিলি করতে এসেছেন। টাকির হোটেল ব্যবসায়ীরা জানালেন আগামী দু'দিনের মধ্যেই টাকির সমস্ত হোটেল খুলে যাবে। তবে আমপানের জেরে টাকিতে আপাতত নৌকায় ইছামতিতে ঘোরা বন্ধ আছে। অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তার অবস্থাও বেহাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement