—প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ দিন ধরে আটকে রয়েছে আবাস যোজনার টাকা। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মতো এই প্রকল্প ঘিরেও রাজ্য-কেন্দ্র চাপানউতোর চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। আবার প্রকল্প নিয়ে তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। মাস কয়েক আগে কেন্দ্রের নির্দেশে আবাস যোজনায় ঘর প্রাপকদের তালিকা নতুন করে যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। সে সময়ে বিভিন্ন এলাকায় বিতর্কও বাধে। কিন্তু বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও এখনও টাকা মেলেনি বলে অভিযোগ। গ্রামের ভোটে এই আবাস-বিতর্কের প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন এলাকার মানুষজন।
আবাস যোজনায় টাকা আটকে যাওয়ায় অনেক জায়গায় অসহায় দিন কাটছে সাধারণ মানুষের। ঘোড়ামারা দ্বীপের বহু মানুষ ইয়াসে ভিটে মাটি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছিলেন। এখনও দ্বীপের বিভিন্ন উঁচু জায়গায় ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করছেন তাঁদের অনেকে। রোদ, ঝড়, বৃষ্টিতে ভরসা ত্রিপলের ছাউনিই। ওই দ্বীপের বাসিন্দা অঞ্জলি কান্ডার বলেন, “ইয়াসে সব হারিয়ে এখন উঁচু জায়গায় ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করি। আবাস যোজনার ঘর মেলেনি। পঞ্চায়েতে বার বার বলেছি। কিন্তু এরা বলছে, কেন্দ্র সরকার টাকা দিচ্ছে না। অনেক পরিবারই এ রকম অসহায় অবস্থায় বাস করছে।”
মূলত দু’টি কিস্তিতে আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হয়। কারও কারও প্রথম কিস্তির টাকা মিললেও পরে আর টাকা আসেনি। ফলে পুরনো ঘর ভেঙে ফেলে নতুন বাড়ি তৈরি শুরু করেও মাঝপথে বিপাকে পড়েছেন। ইতিমধ্যে বর্ষা শুরু হয়েছে। ছেলেপুলে নিয়ে কোথায় যাবেন ভেবেই ঘুম ছুটেছে অনেকের।
আমডাহার বাসিন্দা জয়নাল ফরিদ বলেন, “ভাঙা ঘরেই বর্ষা কাটাতে হবে। যা টাকা দেয় সরকার, তা দিয়ে কোনওমতে মাথা গোঁজার জায়গাটুকু হয়। তা নিয়েও এত রাজনীতি! কিছু বলতে গেলেই অশান্তি।” দেগঙ্গার বাসিন্দা রজত পারুইয়ের কথায়, “আমরা গরিব। আমাদের ভাগ্য সরকারের হাতে। সরকার চাইলে বাড়ি হবে। না হলে এ ভাবেই ভাঙা ঘরে থাকতে হবে।”
আদৌ টাকা মিলবে কি না সে প্রশ্নও উঠছে ইদানীং।
আমডাঙার হামিবা বিবির কথায়, “কোনও সরকারই আমাদের নিয়ে ভাবে না। সে কারণেই টাকা আটকে আছে। কারও কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। ভোটের আগেও কোনও সুরাহা হল না।”