Cyclone Amphan

জল নামেনি এখনও, গরু-ছাগল নিয়ে ছাদে

যাঁদের মাটির ঘর, তাঁরা প্রতিবেশীর বাড়ির ছাদে থাকছেন। আমপানের পর থেকে আজও এমনই অবস্থা হাসনাবাদ ব্লকের পাটলি খানপুর পঞ্চায়েতের খলিসাখালির ঘেরিপাড়ায়।

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ০৬:২৮
Share:

ভোগান্তি: এখনও এই অবস্থায় আছেন বহু মানুষ। হাসনাবাদের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

আমপানের পরে কেটে গিয়েছে এতগুলো দিন। তারপরেও বাড়ির মধ্যে থেকে জল নামেনি। জোয়ার হলেই বাড়ির সামনে কোমর সমান জল হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে তাই গ্রামের মানুষ বাড়ির ছাদে গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

Advertisement

যাঁদের মাটির ঘর, তাঁরা প্রতিবেশীর বাড়ির ছাদে থাকছেন। আমপানের পর থেকে আজও এমনই অবস্থা হাসনাবাদ ব্লকের পাটলি খানপুর পঞ্চায়েতের খলিসাখালির ঘেরিপাড়ায়।

হাসনাবাদের বনবিবি সেতু থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পেরোলে খলিসাখালি গ্রাম। সেখানেই ঘেরিপাড়া। কিছু বাড়িতে তালা ঝুলছে। জানা গেল, বাড়ির সকলে প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। গ্রামের বাকিরা জল থেকে বাঁচতে বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। সঙ্গে রয়েছে গবাদি পশুও। ছাদের উপরে ত্রিপল টাঙিয়ে রাত কাটছে।

Advertisement

এলাকায় মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। বেশির ভাগ দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। কারও সরকারি ঘর জুটেছে, কেউ আবার মাটির এক চিলতে বাড়িতে থাকতেন। জলে বাড়ির জিনিসপত্র সব ভেসে গিয়েছে। আমপানের পর থেকে বিষ্টুপদ সর্দার, বিপ্লব সর্দার, অচিন্ত্য সর্দার, মিনতি সর্দাররা এখন প্রতিবেশীর বাড়ির ছাদে আছেন। গ্রামবাসীরা জানান, যাঁদের বাড়ির মেঝে এখনও তৈরি হয়নি, তাঁদের ঘরের মধ্যে জল ঢুকছে। এ ছাড়া, জোয়ারের জলে ঘরের মধ্যে সাপ ও বিভিন্ন আবর্জনা ঢুকছে। তাই বাধ্য হয়ে সকলে ছাদে থাকছেন। বহু বাড়িতে রান্না করার পরিস্থিতি নেই। তাই ভাটার সময়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে মহিলা ও পুরুষরা হাঁটু সমান জল ঠেলে পানীয় জল ও খাবার কোথায় পাওয়া যায়, তার খোঁজে বেরিয়ে পড়ছেন।

খলিসাখালির ঘেরিপাড়ার বাসিন্দা মিনতি সর্দার, স্বপ্না সর্দার, দীপালি সর্দাররা বলেন, ‘‘আমাদের এই পাড়ায় আমপানের পর থেকে সরকারি ত্রাণ পৌঁছয়নি। ভাটার সময়ে হাঁটু সমান জল ঠেলে প্রায় দু’কিলোমিটার পথ পেরিয়ে দূর্গাপুর স্লুইস গেটের কাছে যেতে হয়। সেখানেই সরকারি জলের গাড়ি আসে। কিন্তু আমরা পৌঁছনোর আগেই অনেকে জল নিয়ে নেয়। আবার সেই জলের ব্যারেল আমাদের কাছে ২৫ টাকা করে বিক্রি করে।’’ বেসরকারি ত্রাণ নিতেও জল ঠেলে অনেক দূর যেতে হয়।

পাটলি খানপুর পঞ্চায়েতের টিলারচকে ডাঁসা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এই গ্রাম এখনও জলের তলায়। তবে এখন টিলারচকে জোরকদমে কাজ চলছে বাঁধ মেরামতির। এ বিষয়ে পঞ্চায়েতের প্রধান পারুল গাজি বলেন, ‘‘বাঁধ মেরামতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টিয়ামারিতেও জোরকদমে কাজ চলছে। দ্রুত সব বাঁধ ঠিক হয়ে যাবে।’’

প্রধানের দাবি, ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি বেসরকারি সংগঠনকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। তারাই গ্রামবাসীদের রান্না করা খাবার দিচ্ছেন। পানীয় জলও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তবুও কিছু মানুষ ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন বলে তিনি মনে করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement