পলি তুলে ফেলা হচ্ছে এ ভাবে।নিজস্ব চিত্র।
সরকারি প্রকল্পের জন্য জমি চাই। কিন্তু কোথাও কোনও জমি মেলেনি। সে কারণে ম্যানগ্রোভ কেটে নামখানায় খাদ্য গোডাউন তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে।
এ দিকে, সরকারি অনুমোদন ছাড়াই প্রকল্প হচ্ছে বলেও অভিযোগ। পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সেচ দফতরের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে। মহকুমা সেচ দফতরের কর্তারা দাবি করছেন, তাঁরা বিষয়টি জানেন না। এ রকম কোনও প্রকল্পের ছাড়পত্রও দেন না তাঁরা। তা হলে কী ভাবে এই কাজ চলছে, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
এ দিকে, ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা দাবি করছেন, ওই এলাকায় তাঁরা গোডাউন তৈরির মতো কোনও প্রকল্পের ছাড়পত্র দেননি। কারণ সেটা তাঁদের এলাকা নয়। প্রকল্পের কথা তাঁরও অজানা বলে দাবি করেছেন বিডিও অমৃতা রায় বর্মন। সব মিলিয়ে প্রকল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্তর বিতর্ক ও ধোঁয়াশা।
নামখানা ব্লকের হরিপুর এবং নামখানা পঞ্চায়েতের সীমান্তের দ্বারিকনগর ও চন্দনপিঁড়ি সীমাখালের কাছে সপ্তমুখী নদীর শাখায় জোয়ারভাটা খেলে এ রকম জায়গায় মেশিন দিয়ে খাল থেকে মাটি কেটে ম্যানগ্রোভ এলাকা ভরাট করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় দশ বিঘা জমির উপরে কাজ চলছে। কিন্তু কোনও সরকারি নোটিস বোর্ড সেখানে লাগানো হয়নি। অর্থাৎ কী প্রকল্পের কাজ, কত টাকা বরাদ্দ, কারা করছে— এ রকম কোনও নির্দেশিকা না থাকায় এলাকাবাসীও বিভ্রান্ত।
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মনোরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘নদীর চরে পরিবেশ নষ্ট করে ওই প্রকল্পে আমরা আপত্তি তুলেছিলাম। কিন্তু আমাদের কথা গ্রাহ্য করা হয়নি। সমিতির অন্য সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজটি হচ্ছে।’’ এই এলাকায় অনেক দিন আগে পঞ্চায়েতের তরফেই ম্যানগ্রোভ পোঁতার কাজ হয়েছিল। তারপর সেখানে বীজ পড়ে অসংখ্য চারাগাছ গজিয়েছে। অভিযোগ, খাল থেকে কাদা পলি তুলে সেগুলির উপরে চাপিয়ে দিয়ে কংক্রিটের নির্মাণ করার দিকে এগোচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতি।
কী বলছে পঞ্চায়েত সমিতি?
সমিতির সভাপতি তথা এলাকার তৃণমূল নেতা শ্রীমন্ত মালি বলেন, ‘‘এটি একটি উন্নয়নের কাজ। ব্লকে একটি খাদ্য গোডাউন হবে। খানিকটা জমি পঞ্চায়েত সমিতির হাতে রয়েছে, বাকিটা সেচ দফতরের রয়েছে। আপাতত ল্যান্ড ডেভলপমেন্টের কাজ চলছে। অনুমোদন চেয়ে পাঠানোও হয়েছে। তেমন ম্যানগ্রোভ নষ্টও করা হয়নি।’’ তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, উন্নয়নের কাজে বাধা দিতেই এ রকম নানা অভিযোগ তোলার চেষ্টা করছে সিপিএম।