প্রতীকী ছবি।
কেউটের ছোবল খেয়েও গুরুত্ব দেননি তিনি। ওই অবস্থায় দু’কিলোমিটার রাস্তা সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। স্নান সেরে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। তার পরেই শরীর অসুস্থ হওয়ায় বাড়ির লোকেদের জানান।
বারাসত জেলা হাসপাতালে তাঁকে যখন আনা হয়, তখন সংজ্ঞা ছিল না দেগঙ্গার তরুণ মোতালেব ইসলামের। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বের হচ্ছিল। সঙ্গে খিঁচুনি। টানা ন’দিন ভেন্টিলেশনে থেকে লড়েছেন মোতালেব। সুস্থ হয়ে আজ,
মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন তিনি। হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “ওই অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা যেত না। শেষ পর্যন্ত আমরাই ঝুঁকি নিই।”
দেগঙ্গার দোহাই গ্রামের চাষি মোতালেব ষষ্ঠীর দিন চাষের কাজে মাঠে গিয়েছিলেন। আল পথে হাঁটার সময়ে একটি কেউটে সাপ তাঁর পায়ে ছোবল মারে। সেই সময়ে কোনও অসুবিধা হয়নি বলে আর পাত্তা দেননি তিনি। কাজ সেরে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরেন। দুপুরে খেয়ে ওঠার পরেই মাথা ঝিমঝিম করতে শুরু করে তাঁর। তখনই বাড়ির লোকেদের কেউটের ছোবলের কথা জানান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে বারাসত হাসপাতালে ছোটেন পরিবারের লোকেরা।
সুব্রতবাবু বলেন, “মোতালেবকে যখন আনা হল, তখন তাঁর অবস্থা যথেষ্ট খারাপ। জরুরি বিভাগের ডাক্তারবাবুরা রেফার করবেন কি না ভাবছিলেন। জানতে পেরে আমি এসে তাঁকে পরীক্ষা করি। বুঝি, এই অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাণসংশয় হতে পারে। তাই এখানেই চিকিৎসা শুরু করি। টানা ন’দিন ভেন্টিলেটরের বাইরে আনা যায়নি তাঁকে। অ্যান্টিভেনমের ৩৪টি ডোজ় লেগেছে। তবে আসল লড়াইটা লড়েছেন রোগী নিজে।”
মোতালেবের বাবা বাবর ইসলাম বলেন, “পুজোর সময়ে ডাক্তার পাব কি না, তার সঙ্গে আরও চিন্তা ছিল। কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে দিলে কী হত জানি না। বেসরকারি হাসপাতালে ন’দিন ভেন্টিলেশনে রাখার সামর্থ্য আমার ছিল না।”