আহত: বর্ণালি। নিজস্ব চিত্র
মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে চড়াও হয়ে মেয়েকে ধারাল দা-কুড়ুল দিয়ে কোপাল বাবা। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগর থানার গোলবাজার এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, জখম তরুণীর নাম বর্ণালি হালদার। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর ঘাড়ে, গলায়, হাতে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। মোট পাঁচটি কোপ মারা হয়েছে।
বর্ণালির শাশুড়ি সরস্বতী অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুলাল মজুমদার পলাতক। তার খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগরের ৩ নম্বর জন কল্যাণপল্লি এলাকার বর্ণালির সঙ্গে প্রায় তিন বছরের সম্পর্ক ছিল গোলবাজার এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর হালদারের। ওই সম্পর্ক বর্ণালির বাবা দুলাল মেনে নিতে পারেননি। দুলাল পেশায় গাছ ব্যবসায়ী। শঙ্কর কাঠের কাজ করেন। আড়াই মাস আগে বর্ণালী বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করেন শঙ্করকে।
দিন কয়েক আগে বর্ণালিকে বাড়িতে নিয়ে আসতে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন দুলাল। বলেছিলেন বিয়ে মেনে নিয়েছেন তিনি। তবে বাবার কথায় মেয়ে বিশ্বাস করেননি। সে আর বাপের বাড়ি যাননি।
বর্ণালির শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ সাইকেল নিয়ে দুলাল মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে আসেন। সাইকেলে একটা ব্যাগ ছিল। তার মধ্যে ধারাল দা ও কুড়ুল ছিল। সরস্বতী বলেন, ‘‘বাড়িতে এসে দুলাল মেয়ের নাম ধরে ডাকতে থাকে। বলে ৫০০ টাকা নিয়ে যা। সমিতিতে জমা করে দিস। বৌমার বাবার গলা শুনে ঘরের দরজায় আসি। আচকমা দুলাল আমার গলায় দা ধরে। হাত মচকে দেয়। হুকমি দিয়ে বলে তুই যত নষ্টের গোড়া। আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে ঘরে ঢুকে যান তিনি।’’
ঘরে তখন বর্ণালি কাজকর্ম করছিলেন। বাবা তাঁকে দেখেই এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। পরিবারের লোকজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে কুড়ুল নিয়ে দুলাল পালিয়ে যান। দা সাইকেল ফেলে রেখে যান। বাসিন্দারা বর্ণালিকে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থা হওয়ায় তাঁকে আরজিকরে স্থানান্তরিত করা হয়।
বর্ণালির মা সোমা বলেন, ‘‘আমার স্বামী মেয়ের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। আমার সঙ্গে অশান্তি করে।’’