ছোটালালের সঙ্গে সুশান্ত। ছবি: নবেন্দু ঘোষ
মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে বাড়ি ফেরালেন হিঙ্গলগঞ্জ বাজার কমিটির সম্পাদক। ইন্টারনেটের মাধ্যমে শুক্রবার ওই যুবকের বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আজ, রবিবার ছোটালাল যাদব নামে ওই যুবককে তাঁর বাড়ির লোক নিতে আসছেন।
মাস ছ’য়েক ধরে ওই যুবক বাড়ি থেকে নিখোঁজ ছিলেন। কোনও ভাবে হিঙ্গলগঞ্জে এসে পৌঁছন। তারপর থেকে পথের ধারে তাঁর ঠিকানা হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোর সময়ে হিঙ্গলগঞ্জ থানা এলাকার ১৩ নম্বর গ্রামে বছর তেইশের ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক আসেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। দেখভাল করতে শুরু করেন। ছোটালাল তাঁর নাম বলতে পারলেও জানাতে পারেননি ঠিকানা।
গ্রামবাসীরা জানান, শান্ত-লাজুক স্বভাবের ছোটালাল সারা দিন সকলের সঙ্গে কাটালেও রাতে মা-বাবা ভাইয়ের কাছে যেতে চেয়ে কাঁদতেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বাসিন্দা গীতা বিশ্বাস, রাজীব মণ্ডল, ইতি মণ্ডল-সহ অন্যরা হিঙ্গলগঞ্জ বাজার কমিটির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের কাছে ছোটালালকে নিয়ে আসেন। সুশান্ত ওই যুবকের কাছে নাম-ঠিকানা জানতে চান। বাড়ি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ছোটালাল গোবরা।’’ ওই দিনও আর কিছুই বলতে পারছিলেন না ছোটালাল। যা শুনে সুশান্ত গুগল খুঁজে জানতে পারেন, উত্তরপ্রদেশের বেনারসের চৌবেপুর থানা এলাকায় গোবরা গ্রাম আছে। এরপরে গুগল ঘেঁটে অনেক চেষ্টা করে শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ সুশান্ত গোবরা গ্রামের একটি ফোনের দোকানের নম্বর পান।
সুশান্ত জানান, ওই দোকানে ফোন করে ছোটালালের সম্পর্কে পুরো বিষয়টি জানান তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সুশান্তর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে ছোটালালের পরিবার। ছোটলালের ভাই ভাইয়ালাল যাদবকে ছোটালালের ছবি পাঠানো হয়। তিনি চিনতে পারেন। এ দিন ভাইয়ালাল টেলিফোনে বলেন, ‘‘বেশ কিছু বছর ধরে দাদার মানসিক সমস্যা রয়েছে। ২০১৯ এর ২৪ জুন বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খুঁজেও পাইনি। এত দিন পরে দাদার খোঁজ পেয়ে আমরা খুব খুশি।’’ রবিবার দুপুরের মধ্যেই হিঙ্গলগঞ্জ চলে আসছেন ছোটালালের দুই ভাই ও বাবা।
সুশান্ত বলেন, ‘‘রবিবার ছোটালালকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এই নিয়ে ৩৭জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা খুশি।’’