গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছেন স্বামী। এ নিয়ে স্ত্রী প্রতিবাদ করতেই শুরু হয় সাংসারিক অশান্তি। গ্রামে ডাকা হয় সালিশি সভা। সেখানে ভাড়াটে খুনি এনে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানার বেলগাছি এলাকায়। অভিযুক্ত স্বামী এবং ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে শোরগোল এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম নুর হোসেন ফকির। তাঁর বাড়ি জীবনতলা থানা এলাকায়। আড়াই বছর আগে সন্তোষপুর এলাকার বাসিন্দা আসমানের সঙ্গে বিয়ে হয় নুরের। ওই দম্পতির এক শিশুসন্তান রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পরে একটি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই যুবক। যা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি শুরু হয় তাঁর। প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় প্রতি দিনই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হত। আসমানের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরে স্বামী তাঁর কোনও দেখাশোনা করতেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমার খাওয়া-পরার টাকাও দিত না। উল্টে কিছু বললেই মারধর করত।’’ এ নিয়ে গ্রামের লোকজনের কাছে দরবার করেছিলেন ওই মহিলা। সমস্যার সমাধানে ওই মহিলার দাদুর বাড়ি বারুইপুর থানার বেলেগাছির নবপল্লিতে একটি সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে যান নুরও। ওই সভায় উপস্থিত হন অজ্ঞাতপরিচয় এক জন। তাঁকে নিজের বন্ধু বলে সালিশি সভায় বসান নুর। ওই ব্যক্তিই আদতে ভাড়াটে খুনি বলে অভিযোগ। আসমানের বাপের বাড়ির অভিযোগ, ‘‘বন্ধুর পরিচয় দিয়ে সালিশি সভায় ‘সুপারি কিলার’ ডেকে নিয়ে এসেছিল আসমানের স্বামী। ওকে খুনের চক্রান্ত করছিল।’’ ওই ব্যক্তিকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেন গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশের একটি সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম সাহিল খান। তাঁর বাড়ি চিৎপুর থানা এলাকায়। স্থানীয়দের কাছে কুখ্যাত বলে পরিচিতি রয়েছে সাহিলের। আসমানের অভিযোগ, ওই ব্যক্তিকে ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলেন স্বামী। লক্ষ্য ছিল, তাঁকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া। খবর পেয়ে সাহিলকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্রও মিলেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় নুরকেও। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে আসমানের দাদুর বাড়ির পিছন দিকে একটি পুকুর থেকে গুলিভর্তি ওই বন্দুক উদ্ধার হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সব মিলিয়ে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছেন তদন্তকারীরা। দু’জনকে গ্রেফতারের পর জেরা করছে পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে বারুইপুরের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযোগের তদন্ত করছে বারুইপুর থানার পুলিশ। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’