সস্তায় চাল বিক্রির নামে প্রতারণা, ধৃত ১

পুলিশ জানিয়েছে, সুভাষের বাড়ি বর্ধমানে। বুধবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৫
Share:

ধৃত: সুভাষ দেবনাথ। —নিজস্ব চিত্র

কখনও নিজেকে শুল্ক দফতরের কর্মী, কখনও পুলিশ, কখনও বিএসএফ জওয়ান পরিচয় দিয়ে লোকের টাকা হাতিয়ে বেড়াত সে। শেষমেশ মঙ্গলবার বিকেলে বনগাঁ থানা-সংলগ্ন ত্রিকোণ পার্ক এলাকা থেকে সুভাষ দেবনাথ নামে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করল পুলিশ। এলাকারই কয়েক জন যুবকের তৎপরতায় ধরা পড়ে সে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, সুভাষের বাড়ি বর্ধমানে। বুধবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও একটি ছোট গাড়ি আটক করা হয়েছে। অভিযোগ, কম দামে চাল-ডাল বিক্রির প্রলোভন দিয়ে একের পর এক আর্থিক প্রতারণা করে চলছিল সুভাষ।

সম্প্রতি বনগাঁ থানা সংলগ্ন এলাকায় এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটে। প্রতারকের হদিস পাচ্ছিল না পুলিশ। বনগাঁ থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজ বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি ইতিমধ্যেই কয়েকটি আর্থিক প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। আরও কার কার সঙ্গে সে প্রতারণা করেছে, তা জানতে জেরা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, বর্ধমান থেকে নিজের ছোট গাড়ি নিয়ে বনগাঁয় আসত সুভাষ। রামনগর রোড এলাকায় গাড়ি রেখে সে বাস, অটো, টোটো করে বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় পৌঁছে যেত। আখ বিক্রেতা, ভ্যান চালক, খেতমজুরদের আশেপাশে ঘুরে ফিরে মোবাইলে কথা বলত। অন্য প্রান্তে অবশ্য কেউ থাকত না। সুভাষ শুনিয়ে শুনিয়ে বলত, প্রচুর চাল-ডাল ধরা পড়েছে। গরিব মানুষকে তা কম দামে বিক্রি করা হবে।সে কথা কানে যাওয়ায় অনেকে উৎসাহিত হতেন। তাঁদের কিছু চাল-ডাল কম টাকায় পাইয়ে দেওয়ার অনুরোধ করতেন। সুভাষ নিজেকে সরকারি কর্মী বলে পরিচয় দিত। আধার কার্ড, টাকা নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে বলত। সুযোগ বুঝে সেই টাকা নিয়ে সুভাষ চম্পট দিত বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, কারও কাছ থেকে ২০ হাজার, কারও কাছ থেকে সে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে। এমন কাণ্ড কারখানার কথা এক পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে শুনেছিলেন স্থানীয় খয়রামারি এলাকার এক যুবক। মঙ্গলবার বিকেলে ত্রিকোণ পার্ক এলাকায় ওই যুবক একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন৷ হঠাৎ তাঁর নজরে পড়ে, ভ্যানে করে দুই ব্যক্তি এসে নামল। এক ব্যক্তি অন্য জনকে আধার কার্ডের ফটোকপি করতে পাঠাল।

ওই দৃশ্য দেখে যুবকের সন্দেহ হয়। তিনি স্থানীয় চায়ের দোকানি দুই ভাই শ্যাম ও ছট্টু সাহাকে ডাকেন। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, সুভাষ অটোয় উঠে পালাচ্ছে। সঙ্গে টাকার বান্ডিল। তাঁরাই অটো থেকে সুভাষকে নামিয়ে ধরে থানায় নিয়ে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সুভাষ চাঁদাপাড়ার বাসিন্দা শেখর মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে একই ভাবে চার টাকা কেজি দরে মিনিটিক চাল বিক্রি করবে বলে ত্রিকোণ পার্ক এলাকায় ডেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। যাঁদের তৎপরতায় ধরা পড়ল সুভাষ, তাঁদের সাধুবাদ জানিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement