ডাক্তার দেখানোর নাম করে স্ত্রী-কন্যাকে ডেকে আনেন আজিজুল। প্রতীকী ছবি।
দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও কন্যার ভরণপোষণের দায়িত্ব টানতে না পেরে নিত্য অশান্তি চলত পরিবারে। তার জেরে স্ত্রী ও দেড় বছরের মেয়েকে খুনই করলেন স্বামী। মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মন্দিরবাজারের দিগম্বরপুরে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম সুহানা খাতুন (২২) এবং রোহানা খাতুন (দেড় বছর)। মঙ্গলবার বিকালে দিগবেড়িয়া থেকে অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধৃতকে কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম আজিজুল জমাদার। কখনও ইটভাটায় কখনও আবার হকারির কাজ করতেন তিনি। তবে ভাল রোজগার ছিল না। বুধবার সন্ধ্যায় তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে ডাক্তার দেখাবার জন্য ফোন করে ডেকে নিয়ে আসেন দিগম্বরপুর এলাকায়। এর পর নির্জন এলাকা বেছে স্ত্রীর ওড়না দিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। পরে মেয়েকে জলাশয়ে ছুড়ে ফেলে দেন।
মন্দিরবাজারের এসডিপিও সৌভিক পাত্র বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তের পর অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ চলতে থাকে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। খুনের ঘটনা নিজের মুখেই স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে তদন্তের বাকি প্রক্রিয়া চলবে।'’
তদন্তকারী অফিসাররা জানান, অভিযুক্তের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ছিলেন তুহিনা। তাঁর বাড়ি মথুরাপুরের গুঞ্জিরপুরে। বছর চারেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল তাঁদের। অন্য দিকে, আজিজুলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী আছেন। সেই পক্ষের চার ছেলে-মেয়ে।
বেশ কয়েকমাস ধরে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে টাকা পয়সা দিতেন না বলে জানিয়েছেন আজিজুল। তাই বেশির ভাগ সময়েই বাপের বাড়িতে থাকতেন দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। মেয়ের শরীর খারাপ হলে ডাক্তার দেখানোর জন্য তাঁর কাছে তুহিনা টাকা চাইলে আজিজুল দিতে পারেননি।
এর পর গত বুধবার তুহিনার দাদাকে ফোন করে স্ত্রী ও মেয়েকে ডাক্তার দেখাবার জন্য লক্ষ্মীকান্তপুরে আসতে বলেন আজিজুল। সেখানে ডাক্তার দেখিয়ে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে গল্প গুজব করার ছলে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে পরিকল্পনা করে খুন করেন তিনি।