মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বীরভূমের মতোই উত্তর ২৪ পরগনাতেও দল পরিচালনার জন্য কোর কমিটি গড়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হাবড়ার বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কয়েক মাসের মধ্যে লোকসভা ভোট। জ্যোতিপ্রিয় কবে জেল থেকে ছাড়া পাবেন, তা নিশ্চিত নয়। বীরভূমেও অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরে জোটবদ্ধ হয়ে চলার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। বুধবার বিধানসভায় নিজের ঘরে জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে কমিটি গড়ে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা।
কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন নারায়ণ গোস্বামী, তাপস রায়, নুরুল ইসলাম, রথীন ঘোষ, বিশ্বজিৎ দাস, বীণা মণ্ডল, পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু। কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘দিদি বলে দিয়েছেন, বালুর (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাক নাম) অনুপস্থিতিতে তোরা জেলাটা ভাল করে দেখবি।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের জন্মলগ্ন থেকে, বিশেষ করে ২০০১ সালে জ্যোতিপ্রিয় গাইঘাটার বিধায়ক হওয়ার পর থেকে এই জেলায় তাঁর প্রভাব বাড়তে থাকে। দলের জেলা পর্যবেক্ষক ও জেলা সভাপতির পদ সামলেছেন দীর্ঘ দিন ধরে। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ভেঙে তৃণমূলে আলাদা চারটি (বনগাঁ, বারাসত, বসিরহাট এবং দমদম-ব্যারাকপুর) সাংগঠনিক জেলা তৈরি হয়। তার আগে পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয়ই জেলা সভাপতি ছিলেন। গোটা জেলা তাঁর প্রভাব ছিল সর্বজনবিদিত। যে কোনও ভোটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছেন তিনি। মতুয়া ভোট তৃণমূলের অনুকূলে আনার ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকার কথা মানেন দলের অনেকে।
জেলায় দলের এক নেতার কথায়, ‘‘দিদি (মমতা) বালুদার চোখ দিয়েই কার্যত জেলাটা দেখতেন। জেলার যে কোনও বিষয়ে দিদিকে প্রকাশ্যে বলতে শোনা গিয়েছে বালু বিষয়টা দেখে নিস।’’ তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে বালুর প্রভাব কিছুটা কমেছিল বা নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। তা সত্ত্বেও তাঁর উপস্থিতি দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর জন্য ছিল যথেষ্ট। জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘বালুদা কবে ছাড়া পাবেন, তা ভেবে সময় নষ্ট করতে দিদি রাজি নন। তাই এখন থেকেই বিকল্প হিসাবে কোর কমিটি তৈরি করে সংগঠন শক্তিশালী করলেন।’’
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী কোর কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পনেরো দিন অন্তর আমরা বৈঠকে বসব। ৩৩টি বিধানসভার কোথায় কী সমস্যা আছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। কোথায় কী কর্মসূচি নিতে হবে, তা নিয়েও কথা হবে। সমস্ত বিষয় মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে।’’ কমিটির আর এক সদস্য বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘যে চারটি সাংগঠনিক জেলা কমিটি আছে, তাদের সহযোগিতা করাও আমাদের কাজ হবে।’’