বনগাঁ মহকুমা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল
বনগাঁ মহকুমা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। এরপরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালের মেল মেডিসিন ওয়ার্ড।
ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক, নার্স, আয়াদের গৃহনিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকা কয়েকজন রোগীদের বারাসত জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বাকিদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি গাইঘাটায় থাকেন। তিনি ফুল ব্যবসায়ী। নিয়মিত হাওড়ায় যেতেন। ৭ জুন তিনি বনগাঁ মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন জ্বর ও মাথা যন্ত্রণা নিয়ে। তাঁকে মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ জুন ওই ব্যক্তির লালারস সংগ্রহ করা হয়। ৯ জুন তা পরীক্ষার জন্যে পাঠানো হয়েছিল। হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে ওই ব্যক্তির লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছয়। পজ়িটিভ বেরোয়। তাঁকে শুক্রবার নিউটাউনে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি করোনাপজিটিভ জানার পরেই শুক্রবার মেল মেডিসিন ওয়ার্ডটি খালি করে দেওয়া হয়। ওয়ার্ডে ৩০-৩৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা কয়েকজনকে নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের লালারস পরীক্ষা করা হবে। শঙ্কর বলেন, ‘‘১৪ দিন মেল মেডিসিন ওয়ার্ডটি বন্ধ থাকবে। মেল মেডিসিন ওয়ার্ড ও পাশের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডটি স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে।’’ যে সব রোগীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কারও উপসর্গ দেখা দিলে লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
বনগাঁ মহকুমা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রয়েছে আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ড। করোনা সাসপেক্ট রোগীদের সেখানে আলাদা করে রাখার কথা। তা হলে জ্বর নিয়ে আসা রোগীকে কেন আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হল না— সে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, ‘‘আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হলেও বাস্তবে এখানে কার্যত রোগী ভর্তি রাখা হয় খুবই কম।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই ব্যক্তির সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো কোনও উপসর্গ ছিল না। শুধু জ্বর ও মাথা যন্ত্রণা ছিল। ফলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘করোনা-সাসপেক্ট’ মনে করেননি। সে জন্যই মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে রাখা হয়।
এখন থেকে ১৪ দিন কোনও পুরুষ রোগী মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হতে এলে তাঁদের বারাসত জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রোগীকে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়ি ভাড়া করতে হবে। অনেকেরই সেই আর্থিক সামর্থ্য নেই। বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য জানান, পুর এলাকায় বসবাসকারী কোনও অসুস্থ মানুষকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যেতে পুরসভা থেকে অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।
এ দিকে, বনগাঁ শহরের বাসিন্দা এক বৃদ্ধা করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন। শঙ্কর বলেন, ‘‘মহিলা ক্যানসারে আক্রান্ত। ৯ জুন কলকাতার একটি হাসপাতালে কেমোথেরাপি দিতে গিয়েছিলেন। তাঁর রিপোর্ট শুক্রবার পেয়েছি। পজ়িটিভ বেরিয়েছে। এলাকা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।’’