হেঁটে মাধ্যমিক দিতে যাচ্ছে সন্দেশখালির পরীক্ষার্থীরা। —নিজস্ব চিত্র।
দু’দিন ধরে সন্দেশখালি উত্তপ্ত। দিকে দিকে বিক্ষোভ এবং জনরোষে এলাকা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সন্দেশখালির মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জীবনে। অশান্ত পরিস্থিতি এবং এলাকায় যানবাহনের অভাবের কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনোই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের কাছে। তাদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, ‘পরীক্ষা দিতে যেতে পারব তো’?
গত ২ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক শুরু হয়েছে। সেই অর্থে মাধ্যমিক পরীক্ষা, পড়ুয়াদের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর কয়েক দিন আগে থেকেই রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে সন্দেশখালি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করতে গিয়ে রীতিমতো মারধর খেয়ে ফিরতে হয়েছিল ইডি অফিসারদের। তার পর থেকে একাধিক বার উত্তেজনা ছড়িয়েছে সন্দেশখালিতে। এলাকায় ইডি অফিসার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর যাতায়াত বেড়েছে। বেড়েছে পুলিশি প্রহরা। তার পর কয়েক দিন এলাকা শান্ত থাকলেও বুধবার থেকে আবার পরিস্থিতি বদলেছে। শাহজাহান বিরোধী বিক্ষোভে বুধবার এবং বৃহস্পতিবার উত্তপ্ত থেকেছে সন্দেশখালি। শাহজাহানের গ্রেফতারি চেয়ে লাঠি, বাঁশ হাতে পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির মহিলারা। পুলিশের সঙ্গে বচসাতেও জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। সেই আবহে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জীবনেও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যেই মাধ্যমিক দিতে যেতে হচ্ছে সন্দেশখালির পরীক্ষার্থীদের। আবার যদি পরিস্থিতি বিগড়ে যায়! সেই ভয়ে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বাড়িও ফিরতে হচ্ছে তাড়াতাড়ি।
পরীক্ষা দিতে যাওয়ার জন্য ঠিকমতো কোনও যানবাহন পাওয়া যাচ্ছে না বলেও সমস্যা বেড়েছে পরীক্ষার্থীদের। অনেকে সঠিক সময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারছে না। ভয়ের আবহে তারা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না বলেও সন্দেশখালির মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের দাবি। তাদের এখন একটাই দাবি, শান্তি ফিরুক এলাকায়।
সন্দেশখালির এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘সন্দেশখালিতে খুব মারপিট হচ্ছে। ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পারছি না। পরীক্ষাও ভাল হচ্ছে না। আমরা চাইছি এ সব বন্ধ হয়ে যাক।’’