লড়াই: প্রতুলের। ছবি তুলেছেন নির্মল বসু
অভাবের সংসারে বাবার সঙ্গে নিজেদের সামান্য জমিতে চাষের কাজ করতে কোদাল হাতে নিতে হয়। মা অসুস্থ থাকায় তাঁর জবকার্ডের মাটির কাজও করে।
সেই হাতেই খাতা-কলম ধরে এসেছে সাফল্য। মাধ্যমিকে ৫৮৫ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সন্দেশখালির প্রতুল বিশ্বাস।
আমপানের পরে ডাঁসা নদীর বাঁধ মেরামতির কাজ করতে হয়েছে বউঠাকুরানি গ্রামের বাসিন্দা প্রতুলকে। খুলনা পিসি লাহা স্কুল থেকে এ বার মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর তারই।
প্রতুলের মা বিষ্ণুপ্রিয়া বছরখানেক ধরে অসুস্থ। বাবা হৃষিকেশেরও শরীর ভাল নেই। সংসার চালাতে নিজেও কাজ করে প্রতুল। বাড়ির গবাদি পশুর দেখভালও অনেক সময়ে করতে হয় তাকে।
এ সব করে যে কয়েক ঘণ্টা সময় পেত, পড়ত সে। টাকার অভাবে অঙ্ক আর ইংরেজি ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল না। তার আক্ষেপ, যদি আরও কয়েকটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক থাকত, তা হলে আরও কিছুটা নম্বর বাড়ত। তবে স্কুলের শিক্ষকরাও যে তাকে খুব সাহায্য করেছেন, তা জানাতে ভোলে না প্রতুল।
প্রতুলের ইচ্ছা, বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে চিকিৎসক হবে। তবে হৃষিকেশ বলেন, ‘‘আমাদের মতো এমন সংসারে ছেলের এত বড় স্বপ্ন কী ভাবে সফল হবে জানি না। সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য যদি আসে, তা হলেই এগোতে পারবে ছেলেটা।’’
এ বিষয়ে প্রতুলের স্কুলের শিক্ষক সুকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘প্রতুল যে ভাবে জবকার্ডের কাজ করে, জমিতে কাজ করার পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে, তা সত্যিই অনেকের কাছে দৃষ্টান্ত। আমরা ওর পাশে আছি।”