নুসরত জাহান। ফাইল চিত্র
কে হবেন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী— কয়েকদিন ধরেই এ নিয়ে জল্পনা চলছিল। ইদ্রিশ আলিই ফের প্রার্থী হবেন নাকি অন্য কেউ— এ নিয়ে চায়ের কাপে তুফান উঠেছিল। এই অবস্থায় অভিনেত্রী নুসরত জাহানের নাম ঘোষণা হতেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেল।
গতবার লক্ষাধিক ভোটে জিতলেও এ বার কেন প্রার্থী করা হল না ইদ্রিশকে?
ইদ্রিশের বিরুদ্ধে স্থানীয় স্তরে অনেক অভিযোগ। তাঁর জনসংযোগ ভাল হলেও উন্নয়নের কাজে দলীয় নেতৃত্বকে তিনি গুরুত্ব দিতেন না বলেই অভিযোগ। তৃণমূলেরই একটা বড় অংশের অভিযোগ, নেতাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে সাংসদ কোটার টাকা তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে খরচ করেছেন। গত ৫ বছরে ইদ্রিশ দলের মূলস্রোতকে উপেক্ষা করে বসিরহাটের উপদলীয় রাজনীতিকেই উৎসাহিত করেছেন বেশি বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতাকে বলতে শোনা যায়, ইদ্রিশের প্রধান সমস্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা না রাখা। যে কোনও কাজে ঠিকাদারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া। ফলে তাঁকে নিয়ে স্থানীয় নেতাদের উপর সাধারণ মানুষের চাপ বাড়ছিল। প্রায়ই মানুষের কাছে ইদ্রিশের কাজের জবাবদিহি করতে হচ্ছিল। ফলে সাধারণ মানুষ ও দল থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলেন তিনি। এর প্রমাণ মেলে সম্প্রতি টাকির দলীয় সভায়। ইদ্রিশ বক্তৃতা করার সময়ে সেখানে মুর্দাবাদ স্লোগান দিয়ে সভা ছাড়তে দেখা গিয়েছিল অনেককেই। মঙ্গলবার দলীয় বৈঠকেও অধিকাংশ নেতা ইদ্রিশের সমলোচনা করেন যা কানে পৌঁছয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ইদ্রিশ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘দলের নেত্রী আমাকে প্রয়োজন মনে করেছেন বলে লোকসভার পরিবর্তে বিধানসভায় লড়ার জন্য মনোনীত করেছেন।’’ ইদ্রিশ প্রার্থী না হওয়ায় তৃণমূলের একটা অংশে অবশ্য হতাশাও আছে। তবে এলাকার মানুষের একাংশ মনে করছে, দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব যাতে প্রকাশ না পায় সে কারণেই নুসরতকে প্রার্থী করা হল। তা ছাড়া যুব সম্প্রদায়ের ভোট সহজে পাওয়ারও এ এক কৌশল। বসিরহাটের তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজি, তুষার সিংহ বলেন, ‘‘এ বার প্রায় ৯৫ হাজার নতুন ভোটার। নতুন প্রজন্মের ভোট নুসরতের মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাবেন।’’