বনমহোৎসবের মঞ্চে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
বনমহোৎসবের মঞ্চেই বনসম্পদ ধ্বংস নিয়ে বনমন্ত্রীর সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন স্থানীয় সাংসদ ও বিধায়ক।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বাসন্তীর ঝড়খালিতে। এ দিন ঝড়খালির হেড়োভাঙা বিদ্যাসাগর বিদ্যামন্দির হাইস্কুল প্রাঙ্গণে বনমহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ম্যানগ্রোভ কেটে মেছোভেড়ি তৈরি করা নিয়ে বন দফতরের আধিকারিকদের সামনেই ক্ষোভ উগরে দিলেন জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল এবং গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। এ দিন ওই অনুষ্ঠানে প্রতিমা ও জয়ন্ত ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বন দফতর, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও জৈব প্রযুক্তি দফতরের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বন দফতরের আধিকারিকদের সামনে প্রতিমা ও জয়ন্ত বনমন্ত্রীকে জানান, বাসন্তীর ভরতগড় এলাকা-সহ বিভিন্ন জায়গায় ম্যানগ্রোভ কেটে ফিশারি হচ্ছে। অথচ, এ ব্যাপারে বনদফতর ও প্রশাসন উদাসীন। শুনে বনদফতরের আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। প্রতিমা বলেন, ‘‘আমার এলাকায় প্রায় ১৮০০ বিঘা জমিতে ম্যানগ্রোভ কেটে ভেড়ি হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এর আগে একাধিকবার বন দফতর ও পুলিশকে জানিয়েছি। কোনও কাজ হয়নি। এক দফতর অন্য দফতরের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছে। যে সব অসাধু লোক ম্যানগ্রোভ কেটে ভেড়ি করছে, তারা যাতে রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে পার না পায়, সেটা দেখতে অনুরোধ করছি।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘‘ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে যারা ভেড়ি করবে, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক রঙ দেখা হবে না।’’ তিনি আরও জানান, প্রশাসনকে এমন ভাবে কাজ করার কথা বলা হবে, যাতে মৎস্য দফতর, বন দফতর কেউই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে না পারে।
বাসন্তীর ভরতগড় এলাকা-সহ সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি ভাবে তৈরি হচ্ছে মেছোভেড়ি। সম্প্রতি ভরতগড় এলাকায় ভেড়ি তৈরি নিয়ে শাসকদলের মদতপুষ্ট দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন জখম হন। এ দিন এ ঘটনার কথা বনমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন সাংসদ ও বিধায়ক। দিন কয়েক আগে রায়দিঘি এলাকায় আক্রান্ত হন বনকর্মীরা। রেঞ্জ অফিসারকে পর্যন্ত মারধর করা হয়। ওই ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।