এয়ার হর্ন বা অন্য শব্দ নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ হয় না বলে অভিযোগ। প্রতীকী চিত্র।
রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের জেরে প্রায়ই মাইক বাজে শহর জুড়ে। জাতীয় সড়কে বাস-ট্রাকের এয়ার হর্নের দাপটও চলে রোজ। শীত এলে এর সঙ্গে যোগ হয় পিকনিক পার্টির আনা ডিজে বক্সের বিকট শব্দ। বছরভর শব্দযন্ত্রণায় জেরবার হতে হয় ডায়মন্ড হারবার শহরের বাসিন্দাদের। অভিযোগ, শব্দদূষণ রোধে ব্যবস্থা নেয় না কেউ।
ডায়মন্ড হারবার পুরসভাটি প্রায় ৫০ বছরের পুরনো। প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো শহরের বর্তমানে জনসংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি। পুর এলাকার অন্যতম বড় সমস্যা, শব্দদূষণ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাজনৈতিক দলের সভা-সমিতি বা কোনও অনুষ্ঠান থাকলেই কপাটহাট থেকে জেটিঘাট পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে লাগানো হয় মাইক ও বক্স। সারাদিনই তারস্বরে বাজে সেই সব। অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দা, সড়কের পাশের দোকানিরা। ডায়মন্ড হারবার জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। তা ছাড়া, বকখালি-সহ অন্যান্য নানা স্পটে যেতে হলে ডায়মন্ড হারবার শহরের উপর দিয়েই যেতে হয়। পিকনিকের মরসুমে ডিজে বক্সের দাপট লেগেই থাকে।
বাস-ট্রাকের এয়ার হর্নের বিকট শব্দ নিয়েও অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এলাকার মানুষ জানান, রাস্তার পাশেই রয়েছে মহকুমা কার্যালয়, স্কুল, মেডিক্যাল কলেজ-সহ নানা অফিস কাছারি। তা-ও এয়ার হর্ন বা অন্য শব্দ নিয়ন্ত্রণে কোনও পদক্ষেপ হয় না। হাসপাতালের কাছে এয়ার হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ বলে লেখা থাকলেও কেউ তা মানেন না বলে অভিযোগ।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা বিভিন্ন সময়ে এয়ার হর্ন নিয়ে অভিযোগ করেছেন। রাস্তার পাশের স্কুলগুলিতেও বিকট শব্দে ক্লাস নিতে সমস্যা হয় বলে অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষের। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাধবপুরের বাসিন্দা সিদ্ধানন্দ পুরকাইতের অভিযোগ, “রাজনৈতিক নেতাদের মদতে ডায়মন্ড হারবার শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিকট শব্দে মাইক-ডিজে বাজানো হয়। সারাদিন বয়স্ক-শিশুরা কষ্ট পান। পুলিশ-প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয় না।”
ডায়মন্ড হারবারের শহর বিজেপির সভাপতি সুরজিৎ হালদারের অভিযোগ, “শহরে মাইকের ব্যবহার দিনে দিনে বেড়েই চলছে। শাসকদলের যে কোনও অনুষ্ঠানে সারা শহর জুড়ে মাইক লাগানো হয়। শব্দদূষণ নিয়ে বহুবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি।” সিপিএম নেতা সমর নাইয়ার অভিযোগ, “এক সময়ে অফিস বা স্কুল টাইমে মাইক-বক্স বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। কিন্ত এখন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত তারস্বরে মাইক বাজে। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। পুলিশ-প্রশাসনও নির্বিকার।”
ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক পান্নালাল হালদার বলেন, “আগের থেকে শহরে শব্দদূষণ অনেক কমেছে। তবুও যদি কারও কোনও অসুবিধা হয়, তারা পুলিশ-প্রশাসনকে জানাতে পারে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা সব সময়ে সভা-সমিতিতে মাইকের শব্দ নিয়ন্ত্রণে রাখি।”