Hasnabad

বন্ধ হয়ে পড়ে আছে গ্রন্থাগার, হতাশ বইপ্রেমী, পড়ুয়ারা 

টাকি পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দপুর পল্লি মিলন সমিতি গ্রন্থাগারে ১৯৮৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত স্থায়ী গ্রন্থাগারিক ছিলেন। পাঠকের সংখ্যাও ছিল অনেক।

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ 

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২২
Share:

বন্ধ হয়ে গিয়েছে সৈয়দপুর পল্লি মিলন সমিতি গ্রন্থাগার। নিজস্ব চিত্র

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় মোট ২২৫টি গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি সরকারি গ্রন্থাগার। সব মিলিয়ে গ্রন্থাগারগুলিতে ৫২৬ জন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু জেলার গ্রন্থাগারে কর্মীর সংখ্যা এখন ১৬০ জন। ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক গ্রন্থাগার। সমস্যায় পড়ছেন বইপ্রেমী ও ছাত্রছাত্রীরা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় ৪৭টি গ্রন্থাগার সম্পূর্ণ বন্ধ। বসিরহাট মহকুমার ৫৮টি গ্রন্থাগারে ১১৮ জন কর্মীর বদলে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের হিসেব অনুযায়ী কাজ করছেন ১৯ জন।

টাকি পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দপুর পল্লি মিলন সমিতি গ্রন্থাগারে ১৯৮৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত স্থায়ী গ্রন্থাগারিক ছিলেন। পাঠকের সংখ্যাও ছিল অনেক। ২০১৪ পরবর্তী সময়ে এক জন গ্রন্থাগারিকের উপরেই এই গ্রন্থাগার-সহ থুবা ব্যবসা সমিতি ও ন্যাজাটের গ্রন্থাগার দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বর্তায়। তিনি ২০১৬ সালে অবসর নেওয়ার পরে তিনটি গ্রন্থাগারেই স্থায়ী গ্রন্থাগারিক নেই। এখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে সৈয়দপুরের গ্রন্থাগারটি। এই গ্রন্থাগারের পরিচালন কমিটির প্রাক্তন সদস্য বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “এলাকার পড়ুয়া ও চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হল। দ্রুত গ্রন্থাগার ফের চালু হওয়া প্রয়োজন।”

Advertisement

শতাব্দী প্রাচীন টাকি রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারেও কর্মী সঙ্কট চলছে গত তিন বছর ধরে। ১৩ জনের জায়গায় মাত্র ৬ জন কর্মী এখানে নিযুক্ত। কর্মীর অভাবে এক জন গ্রন্থাগারিককেই সামলাতে হচ্ছে একাধিকগ্রন্থাগার। হাসনাবাদ থানার দক্ষিণ ভান্ডারখালি অগ্রদূত সঙ্ঘ পাঠাগার, হিঙ্গলগঞ্জ থানার নবোদয় সাধারণ পাঠাগার ও কাদম্বিনী সাধারণ পাঠাগারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন এক জন। ফলে সপ্তাহের প্রত্যেক দিন গ্রন্থাগার খুলে রাখা সম্ভব হচ্ছে না তাঁর পক্ষে।

দক্ষিণ ভান্ডারখালি অগ্রদূত সঙ্ঘ পাঠাগারের পরিচালন কমিটির সম্পাদক অমিতাভ অধিকারী বলেন, “১৯৮৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঠিক ভাবেই গ্রন্থাগারটি চলেছিল। গ্রন্থাগারিকের অবসরের পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়। ২০২০ সাল থেকে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক সপ্তাহে এক দিন করে আসেন। সব সপ্তাহে আবার আসতেও পারেন না। এখন পাঠক সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে।”

সন্দেশখালি থানার খুলনার অসিত দত্ত স্মৃতি পাঠাগার ও দক্ষিণ বিশপুর গ্রন্থাগার দু’টি সামলান এক জন। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের এক গ্রন্থাগারিকের কথায়, “এক জনের উপরে দু’তিনটি গ্রন্থাগারের দায়িত্বের ফলে সপ্তাহে এক দিন করেই একটি গ্রন্থাগারে যাওয়া যায়। এ ভাবে কোনও গ্রন্থাগার ভাল ভাবে চালানো যায় না। পাঠকদেরও সমস্যা হয়। আমাদের বিভিন্ন কাজে জেলার অফিসেও যেতে হয়।”

পশ্চিমবঙ্গ সাধারণ গ্রন্থাগার কর্মী সমিতির বসিরহাট মহকুমার সম্পাদক দীপানন্দ মণ্ডল বলেন, “২০১৫ সালে জেলায় ৯ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ হয়েছিল। তারপরে আর কোনও কর্মী নিয়োগ হয়েছে বলে জানা নেই। কর্মী সঙ্কটে ধুঁকছে গ্রন্থাগারগুলি।” উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গ্রন্থাগার আধিকারিক তাপস মণ্ডল বলেন, “কর্মী নিয়োগ হলে সমস্যা আর থাকবে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement