শুনশান: কর্মবিরতির জেরে ফাঁকা ব্যারাকপুর মহকুমা আদালত চত্বর। সোমবার। ছবি: মাসুম আখতার
অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ। নেই অনেক কিছুই। বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। শেষমেশ তাই ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবী এবং ল’ক্লার্করা সোমবার থেকে শুরু করলেন কর্মবিরতি। তাঁরা জানিয়েছেন, দাবি না মেটা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। আইনজীবীদের অভিযোগ, নতুন ভবনে তাঁদের বসার জায়গা পর্যন্ত নেই।
ল’ক্লার্কদের অবস্থা আরও শোচনীয়। তাঁদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা বা শৌচাগার, কিছুই নেই। করোনা-কালে আদালতের কাজ সীমিত। দীর্ঘ দিন পর পর মামলা এজলাসে উঠছে। এই অবস্থায় আইনজীবীরা কাজ না করলে সমস্যায় পড়বেন অনেকেই।
আদালতের আগের ভবনটি বহু পুরনো। ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। তাই ব্যারাকপুরের প্রাণকেন্দ্র চিড়িয়ামোড়ের কাছে নতুন ভবন তৈরি হয়। সেই নতুন ভবনে আদালত স্থানান্তরিত না হওয়ায় বছরখানেক আগে আইনজীবীরা কর্মবিরতি করেছিলেন। শেষে হাইকোর্ট ও সরকারের মধ্যস্থতায় মিটমাট হয়।
গত ১ অক্টোবর আদালত নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়। নতুন ভবন তুলনায় অনেক ছোট। বহু আইনজীবী এবং ল’ক্লার্ক বসার জায়গা পাননি। কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন বলে দাবি আইনজীবীদের। কিন্তু তা মেটেনি। তাই এ দিন থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন আইনজীবীরা। যার জেরে এ দিন আদালতে আসা অনেকেই সমস্যায় পড়েন।
ব্যারাকপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রবীন ভট্টাচার্য বলেন, “২৪ ঘণ্টার নোটিসে আমরা এই নতুন ভবনে এসেছি। বসার জায়গাটা ন্যূনতম চাহিদা। উকিলবাবুরা মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলবেন কোথায়? সাধারণ মানুষেরও বসার জায়গা নেই। পানীয় জল নেই, শৌচাগার নেই। বারংবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। তাই পরিস্থিতি বিচার করে ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হলাম। যত দিন পর্যন্ত না সমস্যা মিটবে, এই কর্মবিরতিও চলবে।”
পশ্চিমবঙ্গ ল’ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দীপক দেবনাথ বলেন, “আদালত নতুন বাড়িতে উঠে এসেছে ঠিকই। কিন্তু আমরা গৃহহীন হয়ে পড়েছি। আদালতে না এলে আমাদের পেট চলবে কী করে? অনেক সাধারণ মানুষেরও তো অসুবিধা হচ্ছে। আমরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। সমস্যা মিটল না বলেই আন্দোলনে যেতে বাধ্য হলাম।”