কেনাবেচা: ধান বিক্রি কেন্দ্রে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। ছবি: সুমন সাহা
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মতো কুলতলিতেও চালু হয়েছে সরাসরি ধান বিক্রয়কেন্দ্র। কুলতলির জামতলা বাজারের কাছে ব্লক অফিসের সামনের মাঠে বেশ কিছু দিন ধরেই এই কেন্দ্র চলছে। খেতের ধান চাষিরা সরাসরি সরকারের কাছে বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছেন। এতে চাষিদের লাভ থাকছে অনেকটাই। কিন্তু এই বিক্রয়কেন্দ্রে কোনও স্থায়ী সংরক্ষণাগার না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা।
ধান বিক্রির ক্ষেত্রে ফড়েদের প্রভাব কমাতে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছে সরাসরি ধান বিক্রয়কেন্দ্র। কুলতলিতে ব্লক অফিসের পাশে বেশ কিছু দিন ধরেই এই রকম বিক্রয়কেন্দ্র চলছে। এলাকার প্রচুর চাষি ধান বস্তায় করে এনে বিক্রি করছেন এখানে। চাষিরা জানান, এক কুইন্টাল ধান বাজারে বিক্রি করে মোটামুটি ১৪০০ টাকা পাওয়া যায়। সরকারি বিক্রয়কেন্দ্রে সেই একই পরিমাণ ধানের দাম ১৭৫০ টাকা। সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে ২০ টাকার উৎসাহভাতাও। এই ধরনের বিক্রয়কেন্দ্রের দৌলতে ফড়েদের উৎপাত অনেকটাই কমেছে বলেই জানালেন চাষিরা।
সরকারের এই উদ্যোগে সামগ্রিক ভাবে খুশি তাঁরা। পাশাপাশি কুলতলির এই বিক্রয়কেন্দ্রে একটি সংরক্ষণাগার তৈরির দাবিও উঠছে। কী ভাবে চলছে ধান বিক্রির প্রক্রিয়া? বিভিন্ন জায়গা থেকে চাষিরা বস্তায় করে ধান এনে জড়ো করছেন ব্লক অফিসের সামনের খোলা মাঠে। সেখানেই ধান মেপে তুলে দেওয়া হচ্ছে গাড়িতে। ওখান থেকেই তা চলে যাচ্ছে মিলে। তারপর মিল থেকে চাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দোকান বা ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে।
চাষিরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান মিলে যায়। রাখার জায়গা না থাকায়, তার থেকে বেশি ধান চলে এলে তা চাষিদের ফেরত নিয়ে যেতে হয়। আনতে হয় আবার পরের দিন। অনেক ক্ষেত্রেই দূরদূরান্ত থেকে গাড়ি ভাড়া করে চাষিরা ধান নিয়ে আসেন। সে ক্ষেত্রে ফেরত গিয়ে আবার পরের দিন নিয়ে আসতে খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। সেই কারণেই বিক্রয়কেন্দ্রের সঙ্গে ধান রাখার একটি আলাদা জায়গার দাবি জানাচ্ছেন চাষিরা। ধান চাষি মিহির গায়েনের কথায়, ‘‘অনেক সময়ে ধান ফেরত নিয়ে যেতে হয়। রাখার জায়গা থাকলে এখানেই জমা করে রাখা যায়। রোজ যাওয়া আসার খরচটা কমে। বৃষ্টি হলেও খুব অসুবিধা হয় আমাদের।’’
সংরক্ষণাগার যে দরকার তা মেনে নিচ্ছেন এই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা খাদ্য বণ্টন দফতরের আধিকারিকও। তাঁর কথায়, ‘‘বহু দূর থেকে চাষিরা আসেন। কোনও কারণে সে দিন মালটা পাঠাতে না পারলে তাঁদের আবার নিয়ে ফেরত যেতে হয়। রাখার একটা জায়গা থাকলে সব দিক থেকেই সুবিধা হত। ব্যাপারটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’