সম্প্রীতির পুজো। নিজস্ব চিত্র।
চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে পুজোর অন্যান্য কাজ, সবেতেই এগিয়ে আসেন রোহিচউদ্দিন-আজিজুলরা। তাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেন অমর-বনমালীরা। মন্দিরবাজার থানা সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে এই কালী পুজোতে রোহিচউদ্দিন-অমররা পুজোর সমস্ত কাজ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। এই উৎসবে দুই সম্প্রদায়ের মানুষই মেতে ওঠেন।
এ বার এই পুজোর সভাপতি রোহিচউদ্দিন মোল্লা। আর সহ সভাপতি হয়েছেন অমর মণ্ডল। সম্প্রীতির ভিত আরও দৃঢ় করতে তাঁদের এই আয়োজন।
মন্দিরবাজারে বহু বছর ধরে কালী পুজো হয়ে আসছে। পুজোর বেশ কিছু দিন আগে থেকেই এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে সভা ডেকে কমিটি গড়া হয়। এ বারে এই কমিটিতে দুই সম্প্রদায়ের সদস্য ছাড়াও তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিমএম নেতাও যোগ দিয়েছেন। শনিবার বিকেলে রোহিচউদ্দিন, আজিজুল, কালা-অমর, বনমালী, রাজকুমাররা গাড়িতে করে প্রতিমা আনেন। পুজোর বাজার করা থেকে শুরু করে সমস্ত রকমের কাজে তাঁদের পরিবারের মেয়েরাও যোগ দেন। মন্দিরবাজারে প্রায়ই রাজনৈতিক সংঘর্ষ হয়। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে এই পুজোয় এ বার রাজনৈতিক দলের সদস্যেরাও যোগ দিয়েছেন। রহিচউদ্দিন মোল্লা মন্দিরবাজার ব্লকের তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সহ সভাপতি পদে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই কমিটির কাজের ফলে নির্বাচনে কতটা প্রভাব পড়বে বলতে পারব না। তবে সকলে এক সঙ্গে বসে আলাপ আলোচনা হওয়ায় একটা ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়।’’
আবার ওই কমিটিরই সহ-সভাপতি অমর মণ্ডল বিজেপির নেতা। কমিটির সদস্য হিসাবে রয়েছেন বিজেপির ব্লক নেতা অশোক পুরকাইতও। তাঁর কথায়, "নির্বাচনে সংঘর্ষ এড়াতে ওই কমিটির মাধ্যমে সমাধান হতেই পারে। কারণ, পুজোর ক’দিন এক সঙ্গে বসে নিজেদের মধ্যে নানা আলোচনার মাধ্যমে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে।’’
মন্দিরবাজারের সিপিএমের নেতা সজল চক্রবর্তী জানান, সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। এই কারণেই সকলে এক সঙ্গে পুজো করা।
তবে পুজোতে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এ বার কিছু বিধিনিষেধ মানা হয়েছে। বিধি মেনেই চলবে প্রতিমা দর্শন বলে পুলিশ জানিয়েছে। স্যানিটাইজ় ও মাস্ক ব্যবহারের জন্য প্রচার করা হচ্ছে।