পুজোর মণ্ডপে জোরে মাইক বাজানো নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এ বার পুজো কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই কোমর বেঁধে নামছে কাকদ্বীপ মহকুমা পুলিশ-প্রশাসন।
আগে বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপগুলিতে প্রধান বাদ্যযন্ত্র ছিল ঢাক। তারপরে এল কুড়কুড়ি। ইদানীং জেলা সদর কিংবা মহকুমা শহরের পুজোর দিনগুলিতে মণ্ডপে এবং ভাসানের শোভাযাত্রায় তারস্বরে ডিজে-র চল হয়েছে। গ্রামের পুজোতেও শুরু হয়েছে এর ব্যবহার। সরকার নির্ধারিত শব্দমাত্রার থেকে ডিজে-র শব্দমাত্রা অনেক উচ্চগ্রামের বলে অভিযোগ। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বারের পুজোয় শব্দদানবের উপস্থিতি রুখতে চাইছে পুলিশ-প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ভাসানের শোভাযাত্রায় ডিজে-র ব্যবহার নিয়ে কিছু বিধিনিষেধ চালু হচ্ছে। ডিজে ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে পুজো কমিটি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবে প্রশাসন। কাকদ্বীপ মহকুমার ব্লকে ব্লকে বৈঠকগুলি শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা ডিজে নিয়ে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। তাই এ বার আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘২০০০ সালে কেন্দ্রীয় শব্দ আইন অনুযায়ী, পুলিশ এগুলি বন্ধ করতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই উদ্যোগ চোখে পড়ে না। ডিজে থেকে নির্গত শব্দের দাপটে শরীরে প্রভাব পড়ছে।’’
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপের দু’টি থানা এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে এ বার ৬১টি পুজো হয়। কাকদ্বীপ মহকুমা জুড়ে প্রায় ১৩০টি মিউজিক সিস্টেমের দোকান রয়েছে। এই দোকানগুলি থেকেই ডিজে চালানোর প্রয়োজনীয় দুই বা চার স্পিকারের সাউন্ড বক্স, মাইক-সহ অন্যান্য সামগ্রী ভাড়া দেওয়া হয়। গঙ্গাধরপুর, উকিলের বাজার, পুকুরবেড়িয়া, মধুসূদনপুর, কামারহাট, তক্তিপুর, নিশ্চিন্তপুর এলাকাতেই ডিজে বাজানোর রেওয়াজ বেশি।
কাকদ্বীপ সাউন্ড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কালীপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘সুস্থ সংস্কৃতি বজায় রেখেই আমরা ব্যবসা করতে চাই। বিধি না মেনে উচ্চস্বরের মাইক ভাড়া দেওয়ার জন্য গত দু’বছরে ৩৪ জন ব্যবসায়ীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’ সাউন্ড অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানানো গিয়েছে, প্রশাসনের নির্দেশ মেনে এ বার পুজো পিছু একটি করে স্পিকারে দু’টি বক্স, ভাসানের শোভাযাত্রায় দু’টি স্পিকারে দু’টি বক্স, ঘোষণা ও মন্ত্রপাঠের জন্য কয়েকটি মাইক দেওয়া হবে।