ডাকের সাজের প্রতিমা ফলতায়

জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই হুগলির চন্দননগর। এ রকমটাই সকলের জানা। কিন্তু এখন উৎসবের স্বাদ মেটাতে ফলতার হাসিমনগর গ্রামও সেজে উঠেছে জগদ্ধাত্রীর নানা থিমে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫৫
Share:

ফলতার একটি পুজো। নিজস্ব চিত্র।

জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই হুগলির চন্দননগর। এ রকমটাই সকলের জানা। কিন্তু এখন উৎসবের স্বাদ মেটাতে ফলতার হাসিমনগর গ্রামও সেজে উঠেছে জগদ্ধাত্রীর নানা থিমে। এই এলাকায় এ বার ৩২টি সর্বজনীন পুজো হচ্ছে।

Advertisement

কিন্তু এ বার সব কমিটিগুলির মাথায় চিন্তা থেকেই গিয়েছে। কারণ ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ায় উদ্যোক্তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে। পুজোর সময়ে ব্যাঙ্কে টাকা ভাঙিয়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক জায়গাতেই এখনও টাকা দেওয়া হয়নি বলে জানান তাঁরা।

ফলতার ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে মোল্লারঠেস মোড়ে নেমে একটু এগোলেই পড়বে হাসিমনগর গ্রাম। ঢোকার মুখ থেকে শুরু হয়েছে উৎসবের আলো। সারা রাস্তাতেই আলোর রোশনাই চোখে পড়বে। যুবগোষ্ঠীর পুজো হল গ্রামের সব থেকে পুরনো পুজো। ৪৬ বছর ধরে ওই পুজো করা হচ্ছে বলে জানান পুজো উদ্যোক্তারা। ওই ক্লাবের সদস্যেরা জানান, পুজো শুরুর আগে গ্রামের কয়েকজন চন্দননগরে জগদ্ধাত্রীদেবী দর্শনে গিয়েছিলেন। মায়ের আরাধনা খুব ভাল লেগেছিল তাঁদের। তারপর থেকেই গ্রামের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে এখানে পুজো শুরু হয়। কয়েক বছর ওই একটাই পুজো হতো। পরে পাড়ায় পাড়ায় পুজো শুরু হয়। কমিটির সদস্য রামেশ্বর মান্না অসীম মণ্ডলেরা জানান, এই গ্রামে বড় অনুষ্ঠান বলতে জগদ্ধাত্রী পুজোই। কচিকাঁচাদের নতুন জামাকাপড় কেনা হয় এই পুজোয়। আত্মীয়-স্বজন আসেন।

Advertisement

ইয়ং ফাইটার্স ক্লাবের পুজোয় স্থায়ী দালানে প্রতিমা রয়েছে। মণ্ডপের সামনে আদিম সভ্যতা থেকে প্রযুক্তির উত্থানের চালচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তাতে তাঁত শিল্প থেকে নানা কুটির শিল্পেরও উল্লেখ রয়েছে।

ইয়ং স্টাফ ক্লাবের মণ্ডপটি বিশাল আকৃতির। ডাকের সাজের প্রতিমা দেখে মুগ্ধ সকলেই। নিউ সঙ্ঘ, সবুজ সঙ্ঘের পুজো দেখতেও ভিড় করেছেন দর্শনার্থীরা। ওই পুজো কমিটির সদস্যেরা জানালেন, গ্রামের সব পুজোই প্রায় ২ লক্ষ টাকা বাজেটের মধ্যে হয়। ক্লাবের সদস্যদের টাকাতেই পুজো হয়। চাঁদা সে ভাবে নেওয়া হয় না। প্রীতম মান্না, শ্যামল মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে যখন মানুষ দুর্গা পুজো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, আমরা তখন জগদ্ধাত্রীদেবীর আরাধনার প্রস্তুতি নিই। আমাদের লক্ষ্য, জেলার মানুষ চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো যেমন দেখতে যান, তেমন এখানেও আসুন।’’

একই কথা শোনালেন পাশের গ্রাম বাণেশ্বরপুর যুবসমাজ ক্লাবের সদস্যেরা। তাঁদের এ বারের মণ্ডপ তৈরি হয়েছে শিবলিঙ্গের আকারে। মণ্ডপের ভিতরেও নানা কারুকাজ করা হয়েছে। সঙ্গে মানানসই প্রতিমা। ওই পুজো কমিটির সদস্য তারক রায় জানান, ৩৪ বছর ধরে নবমী তিথি মেনে এই পুজো হয়। সন্ধ্যার পরে প্রতিমা দেখার দীর্ঘ লাইন পড়ে।

তবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষার্থীদের জন্য সারা দিন মাইক বন্ধ রাখা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement