ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি —ফাইল চিত্র।
দু’বার নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে যেতে গিয়েও পুলিশি বাধা পেয়ে ফিরতে হয়েছে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। মঙ্গলবার ভাঙড় থেকেই শাসকদলকে তোপ দাগলেন তিনি। বললেন, ‘‘এ ভাবে বিপ্লব আটকানো যায় না।’’
মঙ্গলবার রাতে বারুইপুর সংশোধনাগার থেকে ১২ জন আইএসএফ সমর্থককে মুক্তি দেওয়া হয়। সংশোধনাগারের বাইরে তাঁদের স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে গোলমাল হয়। সেই সংঘর্ষে মৃত্যু হয় তিন জনের। ওই ঘটনার পর বেশ কয়েক জন আইএফএফ কর্মীসমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৩৪ দিন পর তাদের জামিন মঞ্জুর হয়েছে আদালতে। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে নওশাদের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে শাসকদল সীমাহীন অত্যাচার করেছে। তা উপেক্ষা করে আমাদের দলের যে নেতারা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের বিভিন্ন কেস (মামলা) দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। কোথাও আইএসএফ কর্মী ছেলেকে না পেয়ে তাঁর বাবাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। কোথাও বড় ভাইকে পায়নি বলে ছোট ভাইকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। এর পর কাউকে ৩৪ দিন, কাউকে ৩৬ দিন জেল খাটিয়েছে। কাউকে ৩০৭ ধারা দিয়ে আটকেছে। কাউকে অস্ত্র আইনে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে আইএসএফের নিরীহ ছেলেদের আটকে রাখা হয়েছে। আইনি লড়াই লড়ে তাঁদের জামিন করিয়েছি। আজ (মঙ্গলবার) তাঁরা বাড়ি যাবেন।’’ নওশাদের সংযোজন, ‘‘জেল-জরিমানা করে বিপ্লব, আন্দোলনকে আটকে রাখা যায় না। যে বিপ্লব আইএসএফ সংগঠিত করতে চাইছে, সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ার জন্য যে লড়াই করছে, তা চলবে। এর জন্য জেল, জরিমানা যা-ই হোক না কেন, আমরা তার মুখোমুখি হতে তৈরি।’’
উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার এবং রবিবার ভাঙড়ে ঢুকতে চেয়েও ঢুকতে পারেননি ওই কেন্দ্রের বিধায়ক নওশাদ। তিনি পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। অন্য দিকে, পুলিশ জানায় গত কয়েক দিনে অশান্তির জেরে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে এলাকায়। তাই তাঁকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া যাবে না। তবে মঙ্গলবার ভাঙড়ের যে জায়গায় নওশাদ ছিলেন, সেখানে ১৪৪ ধারা জারি হয়নি। ওই প্রসঙ্গে আইএসএফ বিধায়ক বলেন, ‘‘১৪৪ ধারার অজুহাতে আমায় আটকে রাখতে পারবে না। আমি ইতিমধ্যে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালতের মাধ্যমে ছাড়পত্র পাব বলে আশা করছি। আমার লক্ষ্য, ভাঙড়ে শান্তিপ্রতিষ্ঠা করা।’’
তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নওশাদ বলেন, ভাঙড়কে অশান্তির মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখান থেকে ভাঙড়কে শান্ত করা বিধায়ক হিসাবে তাঁর দায়িত্ব। নওশাদের কথায়, ‘‘আমায় ১৪৪ ধারার কথা বলে যে ভাবে আটকাচ্ছে (পুলিশ), তাতে আমি রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, স্পিকার স্যর (বিধানসভার স্পিকার)— সমস্ত দফতরকে জানিয়েছি। এর পর যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে আমি কেন্দ্রের দ্বারস্থ হব।’’