বন্ধ-কাজ: টাকির ডাকঘর। নিজস্ব চিত্র
ইন্টারনেট সংযোগের খামখেয়ালিপনার ফল ভুগতে হচ্ছে ডাকঘরে আসা মানুষজনকে।
টাকি পোস্ট অফিসে এসে প্রায়শই গ্রাহকেরা জানতে পারেন, ‘লিংক নেই’। গত দু’তিন সপ্তাহ ধরে সমস্যা আরও বেড়েছে। মাঝে কিছু সময় জেলা জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল গোলমালের কারণে। সেই সময়টুকু বাদ দিয়েও মানুষ হয়রান হচ্ছেন বলে অভিযোগ। শনিবারও লিংক না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।
টাকি থুবা মোড়ে ডাকঘরের এই শাখা। এই চত্বরে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখাও নেই। ফলে অনেকেই ডাকঘরের উপরে নির্ভরশীল। অবসরপ্রাপ্ত বহু সরকারি কর্মচারী আসেন। বাড়ির মহিলারা আসেন। স্বল্পসঞ্চয়ের জন্যও আসতে হয় অনেককে। কয়েক হাজার মানুষের অ্যাকাউন্ট আছে এখানে। প্রতি দিন কম করে দু’তিনশো গ্রাহক বিভিন্ন পরিষেবা নিতে আসেন।
কিন্তু দিনের অনেকটা সময় লিংক থাকে না। কোনও কোনও দিন একেবারেই কাজ হয় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ফিরতে হয় মানুষকে। অনেকে অধৈর্য হয়ে চলে যান।
এই ডাকঘরের এক গ্রাহক সৈকত মণ্ডল বলেন, ‘‘শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় এসে শুনি, বিদ্যুৎ নেই। তাই কাজ বন্ধ। বেলা ১২টায় যদি বা বিদ্যুৎ এল, কিন্তু তখন লিংক নেই। বেলা ১টায় লিংক এল, এ বার শুনলাম সার্ভার ডাউন।’’ তিনি জানান, বেলা সওয়া ১টা নাগাদ সার্ভার ঠিক হলেও কম্পিউটার চলেছে খুব ধীর গতিতে। একটি পাস বই আপ টু ডেট করতে তিন-চার বার করে মেশিনে ঢোকাতে হচ্ছে।
এমন অভিজ্ঞতা শুধু সৈকতের একার নয়। অনেকের সঙ্গেই কথা বলে উঠে এল একই সমস্যার কথা। নিবেদিতা তরফদার নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘‘স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পে আমার একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কিন্তু পোস্ট অফিসে যখনই যাই, নানা প্রযুক্তিগত সমস্যার কথা শুনে চলে আসতে হয়। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানো সম্ভব হয় না। ঘরের কাজও তো আছে!’’ তিনি জানান, অন্তত দু’দিন চক্কর কেটে তারপরে কাজ হয়।
পোস্ট অফিসে যেহেতু এখন প্রায় সব কাজই অনলাইনে হয়, সে জন্য মানুষকে ভুগতে হয় বেশি। তা ছাড়া, এই ডাকঘরে কর্মীর অভাবও রয়েছে। বহু দিন ধরে মাত্র দু’জন কর্মী আছেন কাউন্টার সামলানোর জন্য। অন্তত আরও এক জন কর্মী খুবই দরকার।
বসিরহাটের দায়িত্বে থাকা ডাকঘর ইন্সপেক্টরের সঙ্গে বার বার টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভবব হয়নি। এসএমএসেরও তিনি উত্তর দেননি।
পরিষেবা নিতে আসা এক গ্রাহকের কথায়, ‘‘কেন্দ্র সরকার ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়বে বলছে। এ দিকে এই তো হাল ইন্টারনেটের!’’