—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামার লক্ষণ নেই গোসাবায়। এ বার দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রকাশ্য মঞ্চে দলীয় বিধায়কের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য করে ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের এক নেতা। এমনকি, বিধায়কের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকিও দিতে শোনা যায় তাঁর মুখে।
সোমবার ব্লক তৃণমূলের ডাকে পাঠানখালিতে ওই অনুষ্ঠান হয়। সেখানেই গোসাবার বিধায়ক সু্ব্রত মণ্ডলের উদ্দেশে শম্ভুনগর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা ব্লক তৃণমূলের নেতা বরুণ প্রামাণিক ওরফে চিত্ত বলেন, ‘‘লাল চক্ষু দেখাবেন না।চিত্ত প্রামাণিক এখনও বুড়ো হয়নি। মনের শক্তি আছে। (ইশারায়বন্দুক চালানো দেখাতে দেখাতে) এই টানায় এখনও একশোয়একশো আছি। সিপিএম, আরএসপি-র তাবড় নেতাদের লাল চোখকে ভয় না করে গোসাবায় তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করেছি। তোর লাল চোখকে ভয়পাই না।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য তথা উপাধ্যক্ষ অনিমেষ মণ্ডল, ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুবিদ আলি ঢালি-সহ অন্য নেতারা। তবে, বিধায়ক ছিলেন না। পরে বিধায়ক বলেন, ‘‘যিনি এ কথা বলেছেন, তিনি স্বার্থান্বেষী, লোভী লোক। একাধিক দলবিরোধী কাজ করেছেন। গত বিধানসভায় দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দিয়েছেন। ওঁর বক্তব্য প্রসঙ্গে এটুকুই বলার যে, কুকুর যদি মানুষের পায়ে কামড়ায়, মানুষ কি কুকুরের পায়ে কামড়াবে? গোটা বিষয়টা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”
শুধু এই ক্ষেত্রেই নয়, একাধিক ঘটনায় গোসাবায় শাসক দলের নেতাদের দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে। এ বিষয়ে জেলা পরিষদ সদস্য অনিমেষ বলেন, “বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকে ধ্বংস করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। সেই কারণে কিছু নেতা ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে এ দিন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটা আলাদা গোষ্ঠী তৈরি করে দলের প্রার্থীদের হারানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বিধায়ক। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলকে হারানোর ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছেন উনি।”
বিজেপির সাথে যোগসাজশের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সুব্রত। তাঁর দাবি, ‘‘এ সব ভিত্তিহীন কথা। অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবেন তো? নিজেদের দোষ ঢাকা দিতেই ভুল বকছেন।’’
এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে দলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জয়দেব হালদার মন্ত্ব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানা নেই, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’