হালিশহরের পুরপ্রধান অংশুমান রায়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা বৈঠকের উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ ২ অগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ওই মেয়াদ বাড়িয়ে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, অনাস্থার নোটিস যথাযথ ভাবে সব কাউন্সিলরদের দেওয়া হয়েছে বলে চেয়ারম্যান যে দাবি করছেন, তা হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানাতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৩১ জুলাই।
বন্ধুগোপাল সাহা নামে ওই পুরসভার এক কাউন্সিলর বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের আদালতে মামলা করে অভিযোগ করেছেন, তাঁর কাছে ১৭ জুলাই হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা আসে। তাতে লেখা ছিল, ১৬ জুলাই কয়েকজন কাউন্সিলর অংশুমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চেয়েছেন। তার ভিত্তিতে ১৯ তারিখ বিকেল ৩টের সময়ে অনাস্থা বৈঠক ডেকেছেন চেয়ারম্যান। ওই বার্তায় অনাস্থা বৈঠক ডাকার তারিখ দেওয়া ছিল ১৬ জুলাই।
মামলায় বন্ধুগোপাল অভিযোগ করেছেন, চেয়ারম্যান নিজেই নিজের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়েছেন। কারণ, তিনি নিজেও জানেন, তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হলেও তিনি জিতে যাবেন এবং পুর আইন অনুযায়ী পরবর্তী ছ’মাস তাঁর বিরুদ্ধে আর অনাস্থা আনা যাবে না। বিজেপিতে যোগ দেওয়া ওই কাউন্সিলরের বক্তব্য, পুরসভার ২৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে এক তৃতীয়াংশের যদি সঙ্গত কারণে ছ’মাসের মধ্যে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চান, তা তাঁরা করতে পারবে না। সেই রাস্তা খোলা রাখার জন্যই তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এ দিন মামলার শুনানিতে সরকার পক্ষের কৌঁসুলি অর্ককুমার নাগ জানান, চেয়ারম্যান কেবল হোয়াটসঅ্যাপে অনাস্থা বৈঠকের বার্তা পাঠাননি। তিনি ‘স্পিড পোস্ট’ এবং ‘পিওন বুক’ পাঠিয়ে কাউন্সিলরদের ওই বৈঠকের নোটিস পাঠিয়েছেন। সেই নথি পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারের কাছে রয়েছে। বন্ধুগোপালের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং সপ্তাংশু বসু জানান, সে ক্ষেত্রে সেই নথি পেশ করতে হবে হলফনামা দিয়ে।
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে স্থগিতাদেশের মেয়াদ ২ অগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়। অংশুমান জানান, আদালত যেমন নির্দেশ দিয়েছে, তেমনই কাজ হবে। যা করা হয়েছে, আইন মেনেই করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও আইন মেনেই করা হবে।