ট্রাফিক আইন নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে ঘটকপুকুরে ট্যাবলো। নিজস্ব চিত্র ।
যান নিয়ন্ত্রণ সহ ভাঙড়ের ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে বিশেষ উদ্যোগ করেছে কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশনের ভাঙড় ট্রাফিক গার্ড। ৮ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়ালি কলকাতা পুলিশের দশম ভাঙড় ডিভিশনের উদ্বোধন করেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভাঙড় ট্রাফিক গার্ড ঘটকপুকুর, বিবিরাইট, পাগলাহাট সহ বাসন্তী হাইওয়ের উপরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ করেছে।
ভাঙড়ের ২১৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকার আইন-শৃঙ্খলা, ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে ভাঙড় ও কাশীপুর থানা ভেঙে আটটি থানা করার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। আপাতত আটটি থানার পরিবর্তে ভাঙড়, চন্দনেশ্বর, উত্তর কাশীপুর ও পোলেরহাট থানার পাশাপাশি ভাঙড় ট্রাফিক গার্ড কাজ শুরু করেছে। ভাঙড় ডিভিশনের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও মোড়গুলি হল ঘটকপুকুর, পাগলাহাট, বিবিরাইট, বড়ালিঘাট, নলমুড়ি, বামুনিয়া, বোদরা, চন্দনেশ্বর, শোনপুর, পোলেরহাট, গাবতলা, সাতুলিয়া, ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার। ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে ট্রাফিক গার্ডের অফিস থেকে ওই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও মোড়গুলির দূরত্ব কমপক্ষে ১০-১৫ কিলোমিটার। বিস্তীর্ণ এলাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা সামলানোর দায়িত্ব রয়েছেন ওসি সহ ১০ জন অফিসার, কনস্টেবল ও সিভিক ভলান্টিয়ার মিলিয়ে ৮০ জন পুলিশ কর্মী।
যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে পুলিশের পক্ষ থেকে ট্রাফিক সিগন্যাল, রাস্তার দু’পাশে গার্ডরেল দেওয়া, গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে স্টিকার লাগানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঘটকপুকুর পাগলাহাট, বালিগাদা, নলমুড়িতে ট্রাফিক সিগন্যাল বসানো হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও, জ়েব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ঘটকপুকুর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে। ঘটকপুকুর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং মামলা দেওয়ার জন্য এনপিআর (নম্বরপ্লেট রেকর্ডার) ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় ট্যাবলো ঘুরছে। হেলমেট পরা, গাড়ির কাগজপত্র ঠিক রাখা, সিট বেল্ট পরা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাইকে সচেতন করা হচ্ছে।
এত দিন ঘটকপুকুর হাই স্কুলের সামনে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকত এসডি-৩ বাস। ইতিমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটকপুকুরে রাস্তার উপর থেকে ওই বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাসন্তী হাইওয়েতে টোটো, ইঞ্জিন ভ্যান, চলাচলের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শুরু করবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাধারণ মানুষ যাতে ট্রাফিক আইন বুঝতে পারেন, সে জন্য ওসি (ট্রাফিক) মিদ্দা ইমামউদ্দিন নিজের ভাবনা থেকে বাংলায় লেখা বিভিন্ন ফ্লেক্স, ব্যানার তৈরি করে রাস্তার দু’পাশে সে সব লাগানোর ব্যবস্থা করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। ঘটকপুকুর মোড়ে গোল আইল্যান্ডকে ভেঙে ছোট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বাসন্তী হাইওয়ের ঘটকপুকুর চৌমাথায় সংকীর্ণ রাস্তার উপরে লাগানো ডিভাইডার ইতিমধ্যে খুলে ফেলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঘটকপুকুরের ব্যবসায়ী রাজু নস্কর বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভাঙড়ের ট্রাফিক ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়েছে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে ফুটপাত মুক্ত হয়েছে।’’
এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক ২) অমিতকুমার সাউ বলেন, ‘‘আমরা ভাঙড় ডিভিশনের ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে বেশ কিছু উদ্যোগ করেছি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় নতুন সিগন্যাল লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় স্টিকার, সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি, আমরা মানুষকে সচেতন করতে নানা ভাবে প্রচার চালাচ্ছি।’’