Coronavirus

coronavirus in West Bengal: করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও

চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তাদের আশঙ্কা, মানুষের বেপরোয়া মনোভাবের ফলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৯:০৩
Share:

বেপরোয়া: মাস্ক নেই কারও মুখেই। বনগাঁ শহরে। নিজস্ব চিত্র।

উদ্বেগ বাড়িয়ে দৈনিক করোনা সংক্রমণ দেড়শো ছাড়িয়ে গেল উত্তর ২৪ পরগনায়। অব্যাহত দৈনিক মৃত্যুর ঘটনাও। জেলার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তাদের আশঙ্কা, মানুষের বেপরোয়া মনোভাবের ফলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এখনও সচেতন হচ্ছেন না বেশিরভাগ মানুষ।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বুধবার জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৯ জন। অথচ, দুর্গাপুজোর আগে ২৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংক্রমণ নেমে হয়েছিল ৭২। বিজয়া দশমীর পর থেকে ১২ দিনের মধ্যে (১৬-২৭ অক্টোবর) উত্তর ২৪ পরগনায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের। এই সময়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৫৮ জন। মঙ্গলবার জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ৬ জন। দুর্গাপুজোর পরে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এই তথ্য-পরিসংখ্যানে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। জেলায় এখনও করোনার টিকা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, জেলার ৭৪,৪৬,৮৬৪ জন ভোটারের মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ৬৪ লক্ষ মানুষ। দ্বিতীয় ডোজ় পাওয়া মানুষের সংখ্যা সাড়ে ২৫ লক্ষ।

জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরোলে পুলিশ ধরপাকড় করছে। একই সঙ্গে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।’’ তিনি জানান, জেলায় এখন যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বেশিরভাগই উপসর্গহীন। আক্রান্ত কত জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তার হিসেব রাখা হচ্ছে।’’

Advertisement

মানুষের বেপরোয়া মনোভাব পরিবর্তন করতে পুরসভা, পুলিশ, প্রশাসন, ব্যবসায়ী সংগঠন প্রচার করছে জেলার নানা প্রান্তে। যদিও সচেতন বাসিন্দাদের বক্তব্য, দেড় বছর ধরে বার বার প্রচারের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। এরপরেও যাঁরা সচেতন হননি, তাঁদের কড়া দাওয়াই প্রয়োজন। পুলিশ রাস্তায় নেমে পদক্ষেপ করলেই একমাত্র তাঁরা মাস্ক পরবেন। বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘মাস্ক যাঁরা পরছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে আরও জোরদার অভিযান চালানো হবে।’’

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপসকুমার রায় বলেন, ‘‘মানুষকে বার বারই বলা হচ্ছে, টিকা নেওয়া থাকুক না থাকুক, সকলকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’’

জেলার সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরে নিজেদের ইচ্ছেমতো ওষুধ খাচ্ছেন রোগীরা। তাতে কাজ হচ্ছে না। অনেক পরে চিকিৎসকের কাছে আসছেন এঁরা।’’ এই প্রবণতা শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। অনেকের ধারণা, বৃষ্টিতে ভেজার ফলে বা ঠান্ডা জল খেয়ে জ্বর বা সর্দি-কাশি হয়েছে। এই মনোভাবের ফলে বিপদ বাড়ছে বলে মনে করছেন ওই চিকিৎসক।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন যাঁরা করোনায় মারা যাচ্ছেন, তাঁদের বেশিরভাগই বয়স্ক এবং কো-মর্বিডিটি যুক্ত।

অন্য দিকে, করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বুধবার দুপুরে রাস্তার নেমেছে কাকদ্বীপ মহকুমা পুলিশ-প্রশাসন। এদিন মাস্ক ছাড়া বাজারে কেনাবেচার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। শারীরিক দূরত্ব-বিধি, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার, মাস্ক পরার নির্দেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement