ঘটনাস্থলে তদন্তকারীরা
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে পঞ্চায়েত সহস্য-সহ তিন জনকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় এক ভাড়াটে গুন্ডা জড়িত। বছর দেড়েক আগে একটি হামলার ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী হওয়ার কারণেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝিকে খুন করা হয়েছে। এমনই দাবি করছে নিহতের পরিবার। যদিও এ নিয়ে তদন্তকারীদের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দেড় বছর আগে বাদল নস্কর নামে এক তৃণমূল কর্মীর উপর হামলা চালিয়েছিলেন ওই ভাড়াটে গুন্ডা। ওই হামলার ঘটনা চোখের সামনে ঘটতে দেখেছিলেন গোপালপুরের পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন। সেই থেকেই ভাড়াটে গুন্ডার সঙ্গে স্বপনের শত্রুতার সূত্রপাত। দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছিলেন তৃণমূল নেতা। স্বপনের কারণে ওই দুষ্কৃতী গ্রামে ঢুকতে পারছিলেন না। সেই রাগ থেকে পঞ্চায়েত সদস্যকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করছেন পড়শিরা। অভিযুক্ত ভাড়াটে গুন্ডার হাতে আক্রান্ত ওই বাদলও বলছেন, ‘‘শত্রুতা থেকেই খুন করে করেছে ভাড়াটে গুন্ডা আর তার দলবল। ওকে (ভাড়াটে গুন্ডা) অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কয়েক দিন আগেই ছাড়া পেয়েছে। তার পরেই স্বপনকে খুনের পরিকল্পনা করে ও।’’
তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচিকে সামনে রেখে একটি প্রস্তুতি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের গোপালপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই বৈঠকেই যোগ দিতে যাচ্ছিলেন স্বপন। স্বপনের সঙ্গে ছিলেন ভূতনাথ প্রামাণিক এবং ঝন্টু হালদার নামে দুই বুথ সভাপতি। তাঁরা কচুয়া এলাকার পিয়ার পার্কের কাছে পৌঁছতেই দুষ্কৃতীরা পথ আটকে তিন জনকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এর পর তাঁদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, দুষ্কৃতীরা স্বপন এবং তাঁর দুই সঙ্গীর মাথা কেটে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু গুলি এবং বোমার আওয়াজে আশপাশের বাসিন্দারা বেরিয়ে এলে তারা বাইকে চড়ে চম্পট দেয়।
স্বপনের স্ত্রী টুকটুকি মাঝি বলেন, ‘‘পাড়ায় স্বপন সকলের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করত। স্বপনের প্রভাব সহ্য করতে পারছিল না ওই ভাড়াটে গুন্ডা। তাই মেরে ফেলা হল।’’ তবে ওই ভাড়াটে গুন্ডা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন বলেই দাবি করেন বাদল। তাঁর কথায়, ‘‘ও (ভাড়াটে গুন্ডা) দুষ্কৃতী। খুনি। রাজনীতি করে না। কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত নয় ও।’’
খুনের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন এডিজি সিদ্ধিনাথ গুপ্ত-সহ বারুইপুর জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে চার সদস্যের সিআইডি দল। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বারুইপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ঘটনার পরেই তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। তবে ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ।’’