electricity

আজও আসেনি বিদ্যুৎ, ভাঙড়ের গ্রাম আঁধারে রইল কালীপুজোতেও

২০২৩ সালে পৌঁছেও বিদ্যুৎহীন হানাখালি। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামটি আজও পিছিয়ে বহু দিক থেকেই। বেহাল রাস্তাঘাট, পানীয় জলের অভাব, শৌচালয় নেই বহু বাড়িতে।

Advertisement

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:২০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

কালীপুজোর রাতেও অন্ধকারেই ডুবে থাকল ভাঙড়ের হানাখালি গ্রাম।

Advertisement

২০২৩ সালে পৌঁছেও বিদ্যুৎহীন হানাখালি। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামটি আজও পিছিয়ে বহু দিক থেকেই। বেহাল রাস্তাঘাট, পানীয় জলের অভাব, শৌচালয় নেই বহু বাড়িতে। ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত, নিউ টাউন লাগোয়া এই হানাখালি গ্রামে ৭০টি পরিবারের বাস। জনসংখ্যা পাঁচশোর বেশি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্বাধীনতার এত বছর পরেও গ্রামে বিদ্যুৎসংযোগ আসেনি। গ্রামের অধিকাংশ রাস্তা এখনও কাঁচা। অন্যান্য পঞ্চায়েত এলাকায় গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পে কংক্রিট, পিচের রাস্তা তৈরি হলেও ব্রাত্য থেকে গিয়েছে হানাখালি গ্রাম। ফলে পাকা রাস্তা না থাকায় গাড়ি ঢুকতে পারে না ওই গ্রামে। তাতে সমস্যায় পড়েন প্রসূতিরা। গ্রামটি মেছোভেড়ি বেষ্টিত। খাল, মেছোভেড়ি পার হওয়ার জন্য সেখানে বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। গ্রামে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থাকলেও তার নিজস্ব ভবন নেই। গ্রামের অধিকাংশই মাটির বাড়ি।

অভিযোগ, বাম আমল থেকেই গ্রামের মানুষ সরকারি সমস্ত সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। তৃণমূলের আমলেও সেই ছবিটা বদলায়নি। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নেতারা গ্রামে এসে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু ভোটের পরে আর সেই সব কাজের কিছুই হয় না বলে অভিযোগ। গ্রামের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই ভেড়িতে কাজ করেন। মহিলারা অনেকে কলকাতায় গৃহসহায়িকার কাজ করেন। গ্রামের বাসিন্দা দীপালি প্রামাণিক বলেন, “গ্রামে আজও বিদ্যুৎ ঢোকেনি। বাচ্চাদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে সমস্ত কাজকর্ম করতে সমস্যা হয়। রাস্তাঘাট না থাকায় অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। সব দিক থেকেই বঞ্চিত এই গ্রাম।” নীলা মণ্ডল নামে আর এক গ্রামবাসীর কথায়, “এই গ্রামে কেউ মেয়ের বিয়ে দিতে চায় না। পাকা রাস্তা না থাকায় বর্ষায় এক হাঁটু কাদা পেরিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে যেতে হয়। পানীয় জলের জন্য গভীর নলকূপ নেই। বাইরে থেকে জল বয়ে আনতে হয়।”

Advertisement

কেন আজও এ অবস্থা? স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাপি মণ্ডল বলেন, “অনেক সুযোগসুবিধা থেকে এই গ্রামের মানুষেরা বঞ্চিত। আমাদের নতুন বোর্ড গঠন হয়েছে। গ্রামের উন্নয়ন নিয়ে পঞ্চায়েতে আলোচনা করেছি।” বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সাবির বলেন, “আমি গ্রামে ঘুরে মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনেছি। উন্নয়নের জন্য পঞ্চায়েত ও ব্লকের মাধ্যমে যতটা কাজ করা সম্ভব, করব।” ভাঙড় ২ বিডিও পার্থ মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, ওই গ্রামে সংযোগ দেওয়ার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। হানাখালি গ্রামের অন্যান্য সমস্যাগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ভাঙড় এলাকার এক কর্তা বলেন, “ওই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য অনেক আগেই খুঁটি বসানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরে কী কারণে সংযোগ দেওয়া হয়নি, তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement