পুলিশ জানিয়েছে, ছ’বছর আগে ট্রেনে একটি পা কাটা পড়ে অঞ্জনের। নকল পা কেনার জন্য তাঁকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বৃদ্ধা। রবিবার সেই টাকাই চাইতে গিয়েছিলেন তিনি।
ধৃত অঞ্জন চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরে বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এক ভিখারিকে গ্রেফতার করল নোয়াপাড়া থানার পুলিশ। ধৃতের নাম অঞ্জন চৌধুরী। তিনি ইছাপুরেরই লেনিননগরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে লেনিননগরে তাঁর বাড়ি থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত অঞ্জন মৃতার পূর্বপরিচিত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার রাতে খুন হন ইছাপুরের নতুন পাড়া কামাখ্যা মন্দির এলাকার বাসিন্দা বছর সত্তরের সিক্তা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর স্বামী জ্যোতির্ময় চট্টোপাধ্যায় সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। সেখান থেকে অবসরের পর ইছাপুর মেটাল অ্যান্ড স্টিল ফ্যাক্টরিতে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর বাড়িতে একাই থাকতেন বৃদ্ধা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে প্রতিবেশী এক মহিলা ওই বৃদ্ধার ঘরের দরজা খোলা অবস্থায় দেখতে পান। ঘরের আলোও জ্বলছিল। দরজা খোলা দেখে তিনি বৃদ্ধার বাড়িতে ঢোকেন। কলিং বেল টিপলেও বৃদ্ধার কোনও সাড়া মেলেনি। এর পর তিনি বৃদ্ধার মোবাইলে ফোন করেও কোনও উত্তর পাননি বলে দাবি করেন প্রতিবেশী মহিলা।
এর পরই ওই মহিলা পাড়ার লোকেদের বিষয়টি জানান। কিছু একটা ঘটেছে এমন আঁচ করেই তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ঘরে ঢুকতেই দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বৃদ্ধা। তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। সোমবার স্নিফার ডগ এনে তদন্ত করে পুলিশ। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে নোয়াপাড়া থানার পুলিশ লেলিননগরের বাসিন্দা অঞ্জনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ছ’বছর আগে ট্রেনে একটি পা কাটা পড়ে অঞ্জনের। নকল পা কেনার জন্য তাঁকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বৃদ্ধা। রবিবার সেই টাকাই চাইতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই টাকা দিতে বৃদ্ধা অস্বীকার করতেই প্রথমে তাঁকে শাড়ির আঁচল দিয়ে শ্বাসরোধ করে মারার চেষ্টা করেন। তার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ফলের ছুরি দিয়ে গলার নলি কেটে দেন। তার পর সেখান থেকে চম্পট দেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, সেই টাকা না পেয়েই বৃদ্ধাকে খুন করেছেন অঞ্জন। ধৃতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করেছে পুলিশ।