পড়শি দেশের অংশে ইছামতী সংস্কারের দাবি

নাব্যতা হারিয়ে বহু দিন হল ইছামতী নদীটি মৃতপ্রায়। নদী বিশেষজ্ঞদের মতে, নদীকে ফের স্রোতস্বিনী করে তুলতে হলে অবিলম্বে  ইছামতীর বাংলাদেশের মধ্যে থাকা অংশ থেকে পলি তুলে সংস্কার করা জরুরি। 

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩২
Share:

গ্রাফিক্স: জিয়া হক

নাব্যতা হারিয়ে বহু দিন হল ইছামতী নদীটি মৃতপ্রায়। নদী বিশেষজ্ঞদের মতে, নদীকে ফের স্রোতস্বিনী করে তুলতে হলে অবিলম্বে ইছামতীর বাংলাদেশের মধ্যে থাকা অংশ থেকে পলি তুলে সংস্কার করা জরুরি।

Advertisement

ইছামতীকে বাঁচাতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে, ‘পশ্চিমবঙ্গ ইছামতী নদী সংস্কার সহায়তা কমিটি।’ সম্প্রতি কমিটির তরফে নতুন ইংরেজি বছরের ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়েছে। ক্যালেন্ডারে নদিয়ার পাবাখালিতে নদীর উৎসমুখ, বাংলাদেশের মধ্যে থাকা নদীর অবস্থা ও স্বরূপনগরে ইছামতী ও যমুনার সংযোগস্থলের ছবি ছাপা হয়েছে।

সম্প্রতি মধ্যমগ্রামে ক্যালেন্ডারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। সেখান থেকে কমিটির কর্মকর্তারা দাবি তুলেছেন, ইছামতীকে বাঁচাতে হলে নদীর যে অংশ বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, সেখানে পলি তুলে সংস্কার করতে হবে।

Advertisement

কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার ফতেপুর থেকে নদীটি বাংলাদেশের শ্রীনাথপুরে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের মধ্যে ইছামতী রয়েছে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার। বাংলাদেশ থেকে নদী ফের এ দেশে প্রবেশ করেছে দত্তফুলিয়ায়। নদী সংস্কার সহায়তা কমিটির কর্ণধার সুভাষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইছামতী নদীকে কী ভাবে বাঁচানো সম্ভব, তা জানতে নদী বিশেষজ্ঞদের দিয়ে আমরা নদীর পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা করিয়েছি। তাতে দেখেছি, ইছামতীকে বাঁচাতে হলে এ দেশের অংশের পাশাপাশি বাংলাদেশের অংশেও পলি তুলে সংস্কার করতে হবে। না হলে স্রোত ফিরবে না।’’ কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে, অতীতে কেন্দ্রের কাছে ওই দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি। ক্যালেন্ডার প্রকাশ উপলক্ষে হাজির ছিলেন রাজ্যের চার সাংসদ সৌগত রায়, তাপস মণ্ডল, মমতা ঠাকুর ও ইদ্রিশ আলি। সুভাষ বলেন, ‘‘শীঘ্রই এই চার সাংসদ কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নদীর বাংলাদেশ অংশের সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার দাবি জানাবেন।’’

ইছামতীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় প্রতি বছর ভারী বৃষ্টিতে নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়। চাষের ক্ষতি হয়। ২০০০ সালে বন্যার পরে থেকে নদী সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হন নদীপাড়ের মানুষ এবং বিভিন্ন সংগঠন।

ইছামতী নদিয়ার পাবাখালিতে মাথাভাঙা নদী থেকে বেরিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ শেষ হয়েছে। সেখান থেকে নদী দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়েছে। কালিন্দী ও ধানসা নামে নদী দু’টি বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নদী ২১০ কিলোমিটার লম্বা। এলাকার মানুষের দাবি মেনে ২০০৫ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্য ও কেন্দ্র আলাদা ভাবে বার পাঁচেক নদী থেকে পলি তুলে সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। কেন্দ্রের উদ্যোগে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী সীমান্তে বর্ণবেড়িয়া থেকে কালাঞ্চি পর্যন্ত সংস্কার করা হয়েছিল। সাময়িক ভাবে নদীর গভীরতা বাড়লেও পরবর্তী সময়ে ফের পলি জমে ফিরিয়ে।

সুভাষ বলেন, ‘‘দেশের মধ্যে উৎসমুখে ইছামতীর সংস্কার ও বাংলাদেশের মধ্যে নদী সংস্কার করলে তবেই নদীকে বাঁচানো সম্ভব হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement