টাকা পেয়েও কেন এগোচ্ছে না কাজ, তাগাদায় প্রশাসন

উপভোক্তারা যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘরের কাজ শেষ করেন, সে জন্য ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের নোটিস ধরানো হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সমস্যার কথা জানতে চাইছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

সামসুল হুদা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

কারও প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া মাটির ঘর। কারও দরমার বেড়া দেওয়া খোলার চাল। দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য সরকারি নানা প্রকল্পে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সরকারি টাকা পেয়েও অনেকে ঘর তৈরি করছেন না। উল্টে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘরের কাজ শেষ না করার ফলে সরকারি টাকা ফেরত চলে যাচ্ছে। ঘর তৈরিতে কী সমস্যা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেছেন বাসন্তী ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

উপভোক্তারা যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘরের কাজ শেষ করেন, সে জন্য ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের নোটিস ধরানো হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সমস্যার কথা জানতে চাইছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬-১৭, ’১৭-১৮ ও ’১৮-১৯ আর্থিক বছরে বাসন্তী ব্লক এলাকার মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, গীতাঞ্জলি আবাস যোজনা-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে প্রায় ১১ হাজার ১০টি ঘর তৈরির অনুমোদন হয়। যার মধ্যে ৫ হাজার ৬৬১টি ঘর এখনও তৈরি না হয়নি। ব্লক এলাকায় ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ৬ হাজার ৯০টি ঘর অনুমোদন হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, উপভোক্তারা প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে ঘরের কাজ করেননি। কেউ আবার প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে ভিত পর্যন্ত কাজ করে ফেলে রেখেছেন। কেউ প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকায় খানিক দূর কাজ করে আর এগোননি। এ সব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনেকে কাজ শেষ না করায় সরকারি টাকা ফেরত যেতে বসেছে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পান উপভোক্তারা। প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তিতে ৪৫ হাজার টাকা মেলে। তৃতীয় তথা শেষ কিস্তিতে পাওয়া যায় বাকি ৩০ হাজার। গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘরের ক্ষেত্রে উপভোক্তারা পান ৭৫ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রথম কিস্তিতে ৫২ হাজার ৫০০ টাকা এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে ২২ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। নিয়মানুযায়ী, প্রথম কিস্তির টাকায় ঘরের কিছু কাজ করার পরে দ্বিতীয় কিস্তির টাকার জন্য আবেদন করা হয়। এ ভাবে ঘরের কাজ শেষ করে রিপোর্ট পাঠানোর নিয়ম।

প্রশাসনের কর্তাদের নজরে এসেছে, উপভোক্তারা অনেক সময়ে ঘরের টাকা পেয়ে অন্য খাতে খরচ করে ফেলেছেন। অনেকে আবার যে জায়গায় ঘর করবেন বলে ঠিক করেছিলেন, পরে দেখা যাচ্ছে শরিকি বিবাদে তাঁরা সেই জায়গায় ঘর করতে পারছেন না। এমনও অভিযোগ উঠছে, উপভোক্তারা যে টাকা পাচ্ছেন, তার একটা মোটা অংশ স্থানীয় নেতাদের দিতে হচ্ছে। ফলে বাকি টাকায় আর ঘর করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে আবার সরকারী নির্দিষ্ট মাপ ছাড়া অনেক বড় করে ঘর করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘গরিব মানুষের জন্য সরকারি নানা প্রকল্পে পাকা ঘরের ব্যবস্থা করেছে সরকার। কিন্তু অনেকে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েও সেই কাজ এগোচ্ছেন না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে সকলে কাজ শেষ করেন, সে জন্য নোটিস দেওয়া হচ্ছে। আমরাও বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমস্যার কথা জানার চেষ্টা করছি। সেই মতো সমাধানেরও চেষ্টা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement