Sundarbans

ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জীববৈচিত্র ও ভারসাম্য বজায় রাখতে সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হল কুমির

এর মধ্যে ৪ বছর বয়সের ৫টি পুরুষ কুমিরকে নিয়ে আসা হয় ভগবতপুর কুমির প্রকল্প থেকে এবং পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী কুমিরটিকে নিয়ে আসা হয় সজনেখালি থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:০৫
Share:

বৃহস্পতিবার প্রথম পর্যায়ে ৬টি কুমির ছাড়া হল। নিজস্ব চিত্র।

'সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প' এবং 'সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ'-এর দক্ষিণ ২৪ পরগনা ডিভিশনের যৌথ উদ্যোগে বৃহস্পতিবার থেকে সুন্দরবনের নদীতে কুমির ছাড়া শুরু হল। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন স্টোরখালি এলাকায় মাতলা নদীতে প্রাথমিক পর্যায়ে ৬টি কুমির ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪ বছর বয়সের ৫টি পুরুষ কুমিরকে নিয়ে আসা হয় ভগবতপুর কুমির প্রকল্প থেকে এবং পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী কুমিরটিকে নিয়ে আসা হয় সজনেখালি থেকে। এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘সুন্দরবনের নদীতে নোনা জলের কুমিরের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। মোট ৫৫টি কুমির ছাড়া হবে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ৬টি কুমির ছাড়া হল।’’ ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জীববৈচিত্র এবং জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই এই প্রচেষ্টা বলে জানান তিনি।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭৬ সাল থেকে পাথরপ্রতিমার ভগবতপুরের কুমির প্রকল্পে কুমিরের প্রজনন কাজ শুরু হয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পর ৪ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। নোনা জলে বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠলেই সুন্দরবনের জঙ্গলের অন্দরে নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভগবতপুরের রেঞ্জ অফিসার তন্ময় চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কোনও কুমির ১ মিটার বা তার বেশ লম্বা হলে তবেই প্রকৃতিতে ছাড়ার উপযুক্ত বলে বিবেচনা করা হয়। প্রাথমিক ভাবে সুন্দরবনের কোনও এলাকায় কুমিরের ডিম পাওয়া গেলে তা উদ্ধার করে ভগবতপুরে নিয়ে আসা হয়। সেই ডিম ফুটে যেমন কুমিরের বাচ্চা হয়। পাশাপাশি, কুমির প্রকল্পে ‘ব্রিডিং পুল’-এর প্রজননক্ষম কুমিরদের ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে কৃত্রিম ভাবে তা ফোটানো হয়।

Advertisement

তবে প্রথম থেকেই কুমিরদের বিভিন্ন রকম ট্যাঙ্কের মধ্যে রেখে প্রতিপালন করা হয়। ৪ বছর বয়সে তারা ১ থেকে দেড় মিটারের মত লম্বা হলেই নোনা জলে ছাড়ার ছাড়পত্র পাওয়া যায়। তবে সাধারণত শীতের সময় সুন্দরবন অঞ্চলের নদীতে জল কম থাকে বলে এই সময়কেই কুমির ছাড়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়। বন দফতর জানিয়েছে, এই শীতে মোট ৫৫টি কুমির সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গার নদীতে ছাড়া হবে। সেগুলির মধ্যে ৪০টি পুরুষ এবং ১৫টি স্ত্রী কুমির।

বৃহস্পতিবার প্রথম পর্যায়ে ৬টি কুমির ছাড়া হল। এদিন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন স্টোরখালিতে কুমির ছাড়ার সময় উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যর মুখ্য বনপাল(বন্যপ্রাণ) বিনোদ কুমার যাদব, সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের অধিকর্তা পিয়ার চাঁদ, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা তাপস দাস, ডিএফও মিলন মণ্ডল-সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement