প্রতীকী ছবি।
গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক তরুণীর দেহ উদ্ধারের পরে চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার নিরামিশার দাসপাড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম সঞ্জিতা দাস (২২)। সোমবার পুলিশের কাছে ওই তরুণীর পরিবার অভিযোগ করে, গায়ের রং কালো হওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়িতে গঞ্জনা শুনতে হত তাঁকে। বছর দুয়েক আগে কন্যাসন্তানের জন্মের পরে নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। এর জেরেই সঞ্জিতাকে মারধর করে, গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং দেওরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। মৃতার দু’বছরের মেয়েকে নিয়ে অভিযুক্তেরা সবাই পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ। সকলের খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলার শিমুলিয়ায় বাড়ি সঞ্জিতার। তাঁর বাবা ১৫ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যান। মাসির বাড়িতে বড় হয়েছেন সঞ্জিতা। বছর চারেক আগে নিরামিশার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সোমবার সঞ্জিতার মাসি অপর্ণা দাস জানান, তেমন আর্থিক সামর্থ্য না-থাকলেও বিয়েতে সোনার গয়না ও অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়েছিলেন তাঁরা। সঞ্জিতার মা অঞ্জনা বলেন, ‘‘রবিবার সকালেও মেয়ে ফোন করেছিল। অনেক ক্ষণ কথা হল। নাতনিকে স্কুলে ভর্তি করানো, নাচ-গান শেখানোর কথা বলছিল মেয়ে। এর পরে দুপুরে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির পাড়ার কয়েক জন ফোন করে জানান, ওকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলতে দেখা গিয়েছে। যে মেয়ে কিছু ক্ষণ আগেই আমার সঙ্গে এত কথা বলল, সে আত্মহত্যা করতে পারে না। ওকে মেরে ফেলা হয়েছে।’’
অঞ্জনার আরও অভিযোগ, ‘‘মেয়ে কালো বলে জামাই ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ওকে কালী বলে ডাকত। বিয়ের দু’বছর পরে মেয়ের সঙ্গে আর থাকবে না বলেও জানিয়েছিল জামাই। ওদের মেয়ে হওয়ার পরে অত্যাচার আরও বেড়ে যায়।’’ সঞ্জিতাকে খুন করে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন অঞ্জনা। এ দিন অভিযোগ পাওয়ার পরে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ।