—প্রতীকী চিত্র।
বাড়িতে রঙের কাজের জন্য জিনিসপত্র বার করে বাইরে রাখা হয়েছিল। সেখানেই চৌকির উপরে রাখা একটি ব্যাগ নিয়ে নাড়াচাড়া করছিলেন বাড়িরই এক যুবক। তখনই ঘটে বিস্ফোরণ। যার অভিঘাতে ওই যুবকের একটি হাতের কিছুটা অংশ উড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁকে সঙ্কটজনক অবস্থায় শহরের এক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে খড়দহের সুখচর এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গুরুতর আহত ওই যুবকের নাম জিতেন্দ্র গুপ্ত। মাস তিনেক আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে ওই যুবক পানিহাটি পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের সুখচর তেজপাল এলাকার বাসিন্দা ভিকি সাউয়ের বাড়িতে আসেন। স্থানীয় একটি কারখানায় ঝালাইয়ের কাজ করেন তিনি। ভিকির মা বেবি বলেন, ‘‘ঘটনার সময়ে বাড়িতে ছিলাম না। খবর পেয়ে এসে শুনছি, বোমা ফেটে নাতির হাত উড়ে গিয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এ দিন সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ বিকট আওয়াজে চার দিক ধোঁয়ায় ভরে যায়। এমনই পরিস্থিতি হয় যে, গোটা পাড়ার সকলে বেরিয়ে আসেন। ভিকিদের বাড়ির উল্টো দিকের একটি বাড়ির জানলার কাচ ভেঙে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা সুমনা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিকট আওয়াজ পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। দেখি, ধোঁয়ায় সব ভরে রয়েছে। তার পরে দেখলাম, রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ছেলেটি পড়ে।’’ বিস্ফোরণে ওই যুবকের ডান হাতের কব্জির উপর থেকে উড়ে গিয়েছে বলে খবর। স্থানীয়েরাই তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বলরাম বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় জিতেন্দ্রকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ওই বাড়িতে বোমা এল কোথা থেকে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তা হলে কি সেখানে কেউ বোমা মজুত করে রেখেছিলেন? এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, ‘‘গলির ভিতরে অনেক বাচ্চা রয়েছে। আজ বড় কিছু ঘটে যেতে পারত।’’ এ দিন ঘটনার খবর পেয়ে খড়দহ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ ওই ব্যাগ থেকে আরও একটি বোমা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পৌঁছয় বম্ব স্কোয়াড। যদিও বাড়িটি তল্লাশি করে পরে আর বোমা পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে, ঘটনার পর থেকে ভিকিরও কোনও হদিস মেলেনি।
ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোথা থেকে, কী ভাবে ওই বাড়িতে বোমা এল, তা দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কিছু রয়েছে কি না, তা-ও গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’’ ঘটনার পরে খড়দহ শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি দিব্যেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘‘এলাকা খুবই শান্তিপূর্ণ। এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। যাঁর বাড়িতে বোমা মিলেছে, তিনি বিরোধী দল করেন।’’