গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রেশন দুর্নীতি মামলায় তাঁর গ্রেফতারির প্রায় তিন সপ্তাহ হল। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রীর ‘ঠিকানা’ এখন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। শুক্রবারই মন্ত্রী পা দিলেন ৬৭ বছরে। অন্য বছর হইহই করে জ্যোতিপ্রিয়ের (বালু) জন্মদিন পালন করতেন দলের নেতাকর্মী এবং তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা। এ বছর তাঁদের মনখারাপ। তবে অন্যান্য বছরের মতো এ বারও মন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে পেট পুরে খাওয়ানো হল সহায়-সম্বলহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। ‘অসুস্থ’ বালুর দীর্ঘায়ু কামনা করে জেল থেকে তাঁর দ্রুত মুক্তি কামনা করলেন মন্ত্রীর বিধানসভা এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব।
হাবড়ার বিধায়ক তথা বনমন্ত্রীর এ বারের জন্মদিন পালন হবে কি না তা নিয়ে প্রথমে একটু দ্বিধায় ছিলেন তৃণমূল নেতারা। শেষমেশ অবশ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুক্রবার জ্যোতিপ্রিয়ের ৬৭তম জন্মদিন পালন করেন হাবড়া পুরসভার চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান। ছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর এবং দলীয় কর্মীরা।
হাবড়া পুরসভার তত্ত্বাবধানে বাণীপুরে ‘বিবেকানন্দ ভবন’ নামে একটি হোম আছে। সহায়-সম্বলহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ঠিকানা ওই হোম। পুরসভার তরফে সেখানকার আবাসিকদের মধ্যাহ্নভোজন করানো হল শুক্রবার। উপলক্ষ, হাবড়ার বিধায়কের জন্মদিন। ‘মেনু’তে ছিল ভাত, ডাল, আলু ভাজা, রুই আর পাবদা মাছের পদ, দই, মিষ্টি, চাটনি, পাঁপড়। হোমের ৩৫ জন বয়স্ক মানুষ পেট ভরে খেয়েছেন সে সব। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, গত তিন বছর ধরে জ্যোতিপ্রিয়ের জন্মদিনে এ ভাবেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।
রেশন দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী এখন জেলে। তাঁর জন্মদিন পালন করা হলেও মন ভাল নেই অনুগামীদের। তবে তাঁদের বিশ্বাস, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে শীঘ্রই হাবড়াবাসীর কাছে ফিরবেন বালু। মন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠ তথা হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব, উনি ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন। ওঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি আমরা।’’ তিনি জানান, অন্যান্য বছর মন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সবাই দল বেঁধে তাঁর বাড়িতে যেতেন। মন্ত্রীকে ফুল-মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেন এবং মন্ত্রী তাঁদের আশীর্বাদ করতেন। এ বার তেমনটা না হওয়ায় মনখারাপ সকলের। নারায়ণচন্দ্রের কথায়, ‘‘ওঁর জন্মদিনে আমাদের প্রার্থনা, উনি সুবিচার পেয়ে আবার হাবড়াবাসীর কাছে ফিরে আসবেন।’’ একটু থেমে তিনি বলেন, ‘‘এ বছর তো কিছুই করা হল না। ভীষণ খারাপ লাগছে।’’