পথে: কাজে বেরিয়েছেন যুবক
বিএ পাশ সিরাজুল ভ্যানে চালিয়ে আনাজ ফেরি করেন। হিঙ্গলগঞ্জ থানার বরুণহাট এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ২০১৯ সালে হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছিলেন। কলেজে পড়তে পড়তে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসলেও পাশ করতে পারেননি।
সিরাজুলের কথায়, ‘‘একবার ভেবেছিলাম, বিএড করে শিক্ষকতার পেশায় আসার চেষ্টা করব। কিন্তু তখন করোনার প্রকোপ দেখা দিল। সব স্তব্ধ হয়ে গেল। এসএসসি নিয়ে যে জটিল পরিস্থিতি চলছিল, তাতে টাকা খরচ বিএড করার আগ্রহও হারিয়ে ফেলি। সেই টাকাও অবশ্য দিতে পারত না পরিবার।’’ এই পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরির আশা ছেড়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা শুরু করেন সিরাজুল। তাতেও সাফল্য আসেনি।
এ দিকে, বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। বাবা দিনমজুর, বিড়ি শ্রমিকের কাজ করেন। মা দিনমজুরি করেন সংসার চালাতে। মা-বাবাকে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে দেখে শেষ পর্যন্ত আনাজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন সিরাজুল।
এখন ভোর ৪টেয় উঠে সাইকেল নিয়ে বসিরহাট, বেড়াচাঁপা বা তালপুকুরে গিয়ে আনাজ কেনেন। বেলা ১০টা থেকে ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন পাড়ায় পাড়ায়।
সিরাজুল বলেন, “দুপুরের রোদে ভ্যানে ঘুরতে কষ্ট হয়। কলেজ পাশ করে এই কাজ করতে অস্বস্তিও কম হয় না। লুকিয়ে চোখের জল ফেলি। কিন্তু বসে থাকলে তো চলবে না!’’
তাতেও যে বিশেষ সুরাহা হয়েছে, তা নয়। বছর ছাব্বিশের সিরাজুল তবু আশাবাদী। বলেন, ‘‘বয়স যতদিন আছে, চেষ্টা করে যাব সরকারি চাকরির।’’