plastics

Plastics: পথে বেরিয়ে হাতে প্লাস্টিক, এ বার গুণতে হবে জরিমানা

গোবরডাঙা পুরসভা এবং গোবরডাঙার থানার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এলাকায় প্লাস্টিক-দূষণ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে মিছিল করা হয়।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২২ ০৯:০১
Share:

বার্তা: গোবরডাঙায় পথে নেমে প্রচার পুরসভার তরফে। ছবি: সুজিত দুয়ারি

দিন কয়েক আগে রাজ্যের পক্ষ থেকে এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ৭৫ মাইক্রনের নীচে সমস্ত প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। আরও জানানো হয়েছে, কোনও বিক্রেতা প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করলে ৫০০ টাকা এবং কোনও ক্রেতা ব্যবহার করলে ৫০ টাকা জরিমানা করা হবে। রাজ্যের পক্ষ থেকে প্লাস্টিক উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকেও ইতিমধ্যে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সরকারি ওই নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু পুরসভা প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে তৎপর হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতা, সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে প্রচার চলছে জোরকদমে।

জেলার বাসিন্দাদের দাবি, করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে পুরসভার নজরদারির অভাবে ফিরে এসেছে প্লাস্টিকের যথেচ্ছ ব্যবহার। দিন কয়েক আগে বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে পথে নেমে প্লাস্টিক ব্যবহার না করার জন্য মানুষকে সচেতন করেছেন। শহর এলাকায় তাঁরা দোকানে দোকানে গিয়ে কয়েক হাজার পাটের ব্যাগ বিলি করেন বিনামূল্যে। পুরপ্রধান জানিয়েছেন, ১ জুলাই থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে লাগাতার ধরপাকড় চলবে।

Advertisement

প্লাস্টিকের দূষণ বন্ধ করতে পদক্ষেপ করেছে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভাও। পুর এলাকায় বাজারগুলিতে কয়েক দিন ধরে চলছে সচেতনতা অভিযান। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। কাউন্সিলরেরা সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন। পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের ব্যাগ ও থার্মোকলের দূষণ থেকে বাঁচতে এবং শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচি চলছে। সাধারণ মানুষকে তাতে শামিল করা হচ্ছে।’’ গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গুপি মজুমদার বলেন, ‘‘পুরসভার পাশাপাশি আমরা বাজার সমিতির পক্ষ থেকেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের বোঝাচ্ছি। অশোকনগর এলাকায় কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির কারখানা আছে। পুরসভা ও প্রশাসনের উচিত, সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া। তা হলে জোগানের পথ বন্ধ হবে।’’ এ বিষয়ে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমরা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির কারখানার হদিস পেয়েছি। সেটি বন্ধ করতে নোটিস পাঠানো হচ্ছে।’’

গোবরডাঙা পুরসভা এবং গোবরডাঙার থানার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এলাকায় প্লাস্টিক-দূষণ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে মিছিল করা হয়। বলা হয়েছে, ৭৫ মাইক্রনের নীচে প্লাস্টিক কেউ ব্যবহার করবেন না। দিন কয়েক আগে পুরসভা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছে। পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ আমরা পেয়েছি। প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রচার কর্মসূচি চলছে। ১ জুলাই থেকে ধরপাকড় হবে।’’

প্লাস্টিক ও থার্মোকলের দূষণ বন্ধ করতে পদক্ষেপ করেছে হাবড়া পুরসভাও। শহর জুড়ে পুরসভার পক্ষ থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার না করতে মাইকে প্রচার চলছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সচেতনা বাড়াতে এবং পদক্ষেপ করতে হাজারখানেক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাজার কমিটির প্রতিনিধি, ক্লাব সংগঠন এবং স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়েও বৈঠক করেছেন পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘১ জুলাই থেকে রাজ্য সরকার ৭৫ মাইক্রনের কম প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেই নির্দেশ মতো হাবড়া শহরে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ এ দিকে, বনগাঁ, বসিরহাট, বারাসত মহকুমার বাজারগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এখনও প্রকাশ্যেই প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার চলছে। এলাকার সচেতন নাগরিকদের বক্তব্য, এই জেলা ডেঙ্গিপ্রবণ। আগে অনেক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকে মারা গিয়েছেন। এ বার বর্ষার আগে এখনও প্লাস্টিকের ব্যাগ, থার্মোকলের জিনিসপত্রের ব্যবহার বন্ধ হয়নি। এর ফলে ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। বিক্রেতারা জানালেন, প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের তুলনায় কাপড়ের ব্যাগের দাম বেশি। কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করলে লাভ অনেক কমে যায়। বাধ্য হয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করতে হয়। পরিবেশকর্মীরা মনে করছেন, মানুষ সচেতন না হলে প্লাস্টিকের ব্যবহার একশো শতাংশ বন্ধ করা সম্ভব নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement