তেলঙ্গনার ঘটনায় পুলিশের এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তের মৃত্যু স্বস্তি দিচ্ছে কাকদ্বীপের মেয়েটির বাবা-মাকে।
গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল দশম শ্রেণির কিশোরী ছাত্রী। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে জঙ্গলের পাশ থেকে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণ করে মেয়েটিকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
২০১৫ সালের ২০ নভেম্বর কাকদ্বীপের গ্রামের ওই ঘটনার পরে চার বছর কেটে গেলেও বিচার পায়নি দরিদ্র পরিবারটি। মামলা বিচারাধীন। মূল অভিযুক্ত গোপাল হাজরা-সহ দু’জন ধরা পড়ে। গোপাল আলিপুর জেলে থাকলেও অন্য জন জামিনে ছাড়া পেয়েছে। বাকি অভিযুক্তেরা অধরাই।
তেলঙ্গনার ঘটনায় পুলিশের এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তের মৃত্যু স্বস্তি দিচ্ছে কাকদ্বীপের মেয়েটির বাবা-মাকে। মেয়েটির মা বলেন, ‘‘ওখানে যা হয়েছে, ভালই হয়েছে। যে মেয়েটাকে ওরা ধর্ষণ করে খুন করেছিল, তার আত্মা শান্তি পাবে। জ্বালা জুড়াবে ওই মহিলা ডাক্তারের বাবা-মায়েরও।’’
কাকদ্বীপের কিশোরীর মা জানান, প্রতিদিন পড়া শেষে মেয়েকে আনতে যেতেন। ২০১৫ সালে ২০ নভেম্বর সন্ধে ৭টা নাগাদ স্যারের বাড়ি গিয়ে জানতে পারেন, স্যারই নেই। তাই মেয়ে আগেই বাড়ির পথে রওনা দিয়েছিল। যেখানে পড়তে গিয়েছিল মেয়েটি, সেখান থেকে তার বাড়ি মিনিট পনেরোর হাঁটা পথ। বাড়িতে এসে মেয়ের মা দেখেন, সেখানেও মেয়ে নেই। এখানে ওখানে ফোন করেও খোঁজ পাননি। রাত ১২টা নাগাদ থানায় ডায়েরি করতে যাওয়ার পথে তাঁরা জানতে পারেন, মেয়ের নগ্ন, ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে আছে।
৭ জনের বিরুদ্ধে পরিবারটি অভিযোগ জানিয়েছিল থানায়। প্রথম দিকে পুলিশ তদন্তে গা করেনি বলে অভিযোগ। পরে চাপে পড়ে গোপাল- সহ দু’জনকে ধরে। মেয়েটির মা বলেন, ‘‘এখনও সকলে ধরা পড়ল না। বছরের পর বছর মামলার টাকা জোগাব কোথা থেকে!’’
ছাত্রীর পরিবারের আইনজীবী জগদীশ দাস বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত বাবা-মায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আরও ৮-১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। মামলাটি আলিপুর পকসো স্পেশাল কোর্টে চলছে।’’ আইনজীবী জানান, তাঁরা জজ কোর্টে মামলাটি চলার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি। এ সবের ফলে কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। তা ছাড়া, অভিযুক্তদের আইনজীবী সময় মতো উপস্থিত না থাকায়, আদালত কিছু দিন বন্ধ থাকার ফলেও মামলার নিষ্পত্তি হতে দেরি হচ্ছে।