এ ভাবেই জঙ্গলে বসবে ক্যামেরা। ফাইল চিত্র ।
সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে বলে অভিমত বন দফতরের। গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে সুন্দরবনে বাঘ সুমারিতে ব্যবহৃত ক্যামেরার ছবি বিশ্লেষণ করে এই তথ্য মিলেছিল। তবে গত বারের তুলনায় এ বার আরও খানিকটা সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছেন বন আধিকারিকেরা। সর্বশেষ সর্বভারতীয় ব্যাঘ্র সুমারিতে সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যা ছিল ১০১টি। এর পরে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প বাঘ গণনা করে ২০২৩ সালে। সেই সুমারিতে সংখ্যা আরও বেশ খানিকটা বেড়েছে বলে দাবি করেছিলেন বনকর্তারা।
২০২১-২২ সালে সর্বশেষ সর্বভারতীয় ব্যাঘ্র সুমারি হয়। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই সুমারিতে কাজ করে দেশের সমস্ত ব্যাঘ্র প্রকল্প। কাজ শেষের পরে বাঘের ছবি বিশ্লেষণ করে পাওয়া তথ্য প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু প্রতি বছরই সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প নিজেদের মতো করে তাঁদের এলাকায় বাঘেদের পরিসংখ্যান নেয়। একই ভাবে গভীর জঙ্গলে ইনফ্রা-রে প্রযুক্তি সম্বলিত স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা বসিয়ে এক মাস ধরে চলে বাঘেদের ছবি তোলার কাজ। ছবি ওঠার পরে সেই ছবি বিচার বিশ্লেষণ করে সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যা নির্ধারণ করে বন দফতর। তবে এ বার ৩০ দিনের বদলে ৪৫ দিন ধরে জঙ্গলে ক্যামেরা বসিয়ে ছবি তোলা হবে বাঘেদের জানিয়েছেন বনাধিকারিকেরা। পাশাপাশি, এ বার সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকা ও ২৪ পরগনা বন বিভাগ এলাকায় এক সঙ্গে ক্যামেরা বসানো হবে। মোট ৭২২টি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে এ বারের বাঘ সুমারিতে। প্রায় ৩৫০ জন বনকর্মী এই ক্যামেরা বসানোর কাজ করবেন। এ বিষয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর থেকে তিন দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বনকর্মীদের।
শেষ সর্বভারতীয় বাঘ সুমারির তুলনায় গত বছর সুন্দরবনে বাঘ গণনায় অনেক বেশি সংখ্যায় বাঘের খোঁজ মিলেছিল জঙ্গলে। এ বার সেই সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে আশা বনকর্মীদের। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “গত বছর বাঘ গণনার ফলাফলে আমরা খুশি ছিলাম। কারণ, ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে প্রচুর ব্যাঘ্র শাবকের ছবি উঠেছিল। এ বার সেগুলি যেমন আরও বড় হয়েছে, তেমনই নতুন করে বাঘেদের প্রজননের ফলে আরও শাবকের জন্ম হয়েছে গভীর জঙ্গলে। তাই আমাদের অনুমান, সুন্দরবনে বাঘেদের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।’’
বন দফতর সূত্রের খবর, এক বছরের নীচে যে সমস্ত শাবকের বয়স সেগুলিকে গণনায় ধরা হয় না। গত বারের ছবি অনুযায়ী সেই শাবকের সংখ্যাও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে জঙ্গলে। পাশাপাশি, ১ থেকে ৩ বছর বয়সী বাঘের সংখ্যাও ২০ শতাংশের কাছাকাছি ছিল বলে দাবি বন দফতরের। ফলে গত এক বছরে সুন্দরবনে যে বাঘেদের সংখ্যা যে যথেষ্ট বেড়েছে, সে সম্পর্কে কোনও সন্দেহ নেই বলেই দাবি বনাধিকারিকদের।