নামখানায় ভিড়েছে এমনই ইলিশ বোঝাই ট্রলার। —নিজস্ব চিত্র
মাস খানেকের খরা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়েছে ইলিশ। রবিবার সমুদ্র থেকে বিপুল পরিমাণ ইলিশ নিয়ে নামখানায় পৌঁছেছেন মৎস্যজীবীরা। মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিন ধরে প্রায় ছয় হাজার কেজি ইলিশ পাওয়া গিয়েছে।
পূবালি বাতাস এবং ঝিরঝিরে বৃষ্টি। এই দুইয়ের কেরামতিতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়েছে বিপুল ইলিশ। বর্ষার সময় এই ইলিশ স্বাদু হবে বলেই মত মৎস্যজীবীদের। ইতিমধ্যেই সেই ইলিশ পৌঁছে গিয়েছে নামখানা ঘাটে। এর পর সেই ইলিশ পৌঁছে যাবে ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার মাছের আড়তে। সেখানে নিলামের পর সমুদ্রের রূপালি ফসল পৌঁছে যাবে রাজ্যের বাজারগুলিতে। যে ইলিশ সমুদ্র থেকে এসেছে তার ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে এক কেজি। মরসুমের প্রথম ইলিশ হওয়ায় দাম একটু চড়া। রবিবার এই পাইকারি বাজারে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ইলিশ কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এ ছাড়া ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশের দাম কেজি প্রতি প্রায় ৯৫০ টাকা। ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজন ইলিশের দাম ছিল কেজি প্রতি এক হাজার ৩০০ টাকা।
কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর এবং রায়দিঘির প্রায় তিন হাজার ট্রলার মূলত গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরে। সমুদ্রে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে নামলেও, একের পর এক কটাল এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে। তার ফলে গত তিনটি ট্রিপে ইলিশ না পেয়ে কিছুটা ব্যর্থ মনোরথেই ফিরতে হয়েছে অধিকাংশ ট্রলারকে৷ তবে এ বার উলটপুরাণ। কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘পর পর কটাল এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল। তার জেরে উত্তাল ঢেউয়ে জাল ফেলার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। পর পর তিনটি ট্রলার দুর্ঘটনা ঘটল। গভীর সমুদ্র থেকে আজ সকালে ১৫টি ট্রলার ইলিশ নিয়ে নামখানা ঘাটে ঢুকেছে। প্রতিটিতেই প্রায় ৪০০ কেজি করে ইলিশ আছে। আশা করছি, এ বার ভাল ইলিশ মিলবে।’’