পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজ। -নিজস্ব চিত্র।
মাঝ সমুদ্রে পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজ নোঙর করে বার্জের মাধ্যমে কয়লা খালি করার কাজ চলছে। আর তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে সাগরদ্বীপের ধবলাট এলাকার মৎস্যজীবীদের মধ্যে। জম্বুদ্বীপের কাছাকাছি জাহাজটি যেখানে নোঙর করা রয়েছে সেখানেই সামুদ্রিক মাছের আধিক্য। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে এই জায়গাতেই ডিঙি-নৌকা নিয়ে জাল ফেলে আসছেন প্রান্তিক মৎস্যজীবীরা। কিন্তু জাহাজ নোঙর করার পাশাপাশি ৫টি বার্জের মাধ্যমে কয়লা খালি করার কাজ চলতে থাকায় জাল ফেলতে পারছেন না তাঁরা। টানা কয়েক দিন মাছ ধরতে না পারায় বন্ধ উপার্জন।
তবে ইতিমধ্যেই জাহাজটি সরানোর আবেদন জানিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে মৎস্যজীবী সংগঠন। এ বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সম্পাদক মিলন দাস বলেন ‘‘জাহাজটি থাকায় খুবই সঙ্কটে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য দফতরকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি জানানো হয়েছে। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট এবং কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদনও জানানো হচ্ছে।’’
গত ৭ দিন আগে লাইবেরিয়া থেকে আসা পণ্যবাহী জাহাজ ‘বেল মনরোভিয়া’ জম্বুদ্বীপের কাছে বঙ্গোপসাগরে নোঙর করে। পাঁচটি বার্জ ওই জাহাজ থেকে প্রতিদিন কয়লা খালি করা শুরু করেছে। বছরভর এই জায়গাতেই মাছ ধরে পেট চলে সাগরদ্বীপের ধবলাট এলাকার শতাধিক মৎস্যজীবীর। আগে কোনও জাহাজ পণ্য খালি করার সময় জম্বুদ্বীপ থেকে অনেক দূরে নোঙর করত। কিন্তু লাইবেরিয়ার পণ্যবাহী জাহাজটি মাছ ধরার মূল জায়গাতেই নোঙর করেছে। জাহাজ চলাচলের ফলে জলও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
আরও পড়ুন: টাটা-অম্বানীদের ব্যাঙ্কিং-এ টানতে নয়া সুপারিশ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্যানেলের
এমনিতেই লকডাউনের কারণে মৎস্যজীবীরা আর্থিক অনটনে পড়েছিলেন। তার উপর এক সপ্তাহ মাছ ধরতে না পারায় তাঁদের উপার্জন পুরোপুরি বন্ধ। সাগরদ্বীপের মৎস্যজীবী নিতাই সামন্ত জানান ‘‘৫০ বছর ধরে ওই এলাকায় মাছ ধরি। এলাকার বেশিরভাগ মানুষের রুজি-রোজগার জড়িয়ে আছে ওই জায়গাটির উপর। আগে কখনও জাহাজ নোঙর করতে দেখিনি। জাহাজের কারণে সপ্তাহ খানেক ধরে মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ।’’