Mango Production

আশঙ্কায় কাঁচা আম-কলা পেড়ে ফেলছেন চাষি

বসিরহাট, দেগঙ্গায় প্রচুর পরিমাণে আমের ফলন হয়। দেশ-বিদেশের বাজারে যায় সেই আম।

Advertisement

নির্মল বসু ও সীমান্ত মৈত্র

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২১ ০৫:৩৯
Share:

স্তূপাকার: ফসল নামিয়ে ফেলেছেন, কিন্তু মিলছে না দাম। বাগদা এবং দেগঙ্গায় ছবি দু’টি তুলেছেন নির্মাল্য প্রামাণিক ও সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

বৃষ্টি সময় মতো না হওয়ায় আমের ফলন কম। তার উপরে প্রবল গতিতে ধেয়ে আসতে চলেছে ইয়াস। সব কিছু তছনছ হওয়ার আগে গাছ থেকে নামিয়ে ফেলা হচ্ছে আম। এ দিকে, লকডাউনে গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। সময়ের আগে আম পেড়ে ফেলায় মিলছে না বাজারদর। পাকা আমের বিক্রি নেই বললেই চলে। গত বছর আমপানের পরে এ বছরও বড় রকম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন আম চাষিরা।

Advertisement

বসিরহাট, দেগঙ্গায় প্রচুর পরিমাণে আমের ফলন হয়। দেশ-বিদেশের বাজারে যায় সেই আম। বহু মানুষ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে। কিন্তু গত দু’বছর ধরে আম বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানালেন, করোনা-আবহে গাড়ির অভাবে কেনাবেচা মার খাচ্ছে। অবিক্রিত পাকা আম জলের দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

এ দিকে, ঝড়ের হাত থেকে বাঁচাতে তড়িঘড়ি কাঁচা আম পেড়ে ফেলায় ব্যবসায়ীদের ঘরে জমে গিয়েছে টন টন আম।

Advertisement

আম বিক্রি করতে আসা হান্নান আলি সর্দার, কৈলাস চট্টোপাধ্যায়রা জানালেন, গত বছর আমপানে আম গাছ ভেঙে ক্ষতি হয়েছিল। এ বার ইয়াসের হাত থেকে আম বাঁচাতে আগাম পেড়ে নিতে হচ্ছে। বাজারে অতিরিক্ত আম ওঠায় সঠিক দাম মিলছে না। সঞ্জয় মৌলিক বলেন,‘‘ গত বছর যে পাকা আম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এ বছর তার দাম ২০ থেকে ২২ টাকা কেজির বেশি দিচ্ছে না ব্যবসায়ীরা।’’ বাদুড়িয়ার আলি হোসেন বিহারে পাকা আম রফতানি করেন। জানালেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন টন টন কাঁচা আম আসছে বাজারে। কাসিম আলি, রেজাউল বিশ্বাসদের কথায়, ‘‘ঝড়ের ভয়ে আম পেড়ে ফেলায় সে সব ঘরে মজুত হয়ে যাচ্ছে। কোথায় আম বিক্রি করব তা ভেবে পাচ্ছি না।’’

আমপানে বাগদার কলাচাষি ভবেন বাইনের তিন বিঘে জমির কলাচাষ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চাষের খরচ পর্যন্ত ওঠেনি। এ বার ভবেন শুনেছেন আবারও বড়সড় ঝড় আসতে চলেছে। ফলে আতঙ্ক তাঁকে তাড়া করছে। শনিবার তিনি কলাখেতে থাকা সব ক’টা কাঁদি কেটে বাগদার হাটে নিয়ে গিয়েছিলেন। অর্ধেক দামে কলা বিক্রি করতে বাধ্য হলেন। ভবেন বলেন, ‘‘আমপানে কলাচাষ পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আবার ঝড় আসছে জানতে পারছি। তাই আগেভাগে কলা কেটে বিক্রি করে দিয়েছি। লাভ হয়নি। তবু কিছু টাকা পেয়েছি।’’

সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার বাগদায় হাট বসে। এ দিন হাটে দূরদূরান্ত থেকে চাষিরা খেতের কলা কেটে নিয়ে এসেছিলেন। অনেকে জানিয়েছেন, অন্য দিনের তুলনায় শনিবার প্রায় চারগুণ বেশি কলা এসেছে হাটে। কেউই ভাল দর পাননি। আমডোবের বাসিন্দা কলাচাষি হরপ্রসাদ ঘোষ ২০ কাঁদি কলা এনেছিলেন। ১০০ টাকায় কাঁদি বিক্রি করেছেন। অন্য সময়ে কাঁদি বিক্রি হয় ৩৫০ টাকায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement