কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আনিসুরের স্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
ভোট দেওয়ার জন্য শনিবার বেলা পৌনে ১টা নাগাদ বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের ১০৩ নম্বর বুথে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন আনিসুর ওস্তাগার। সেখানেই দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর। ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। তিন সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্ত্রী রোজিনা ওস্তাগার।
ওই বুথ থেকে আনিসুরের আত্মীয় রোকেয়া ওস্তাগার তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দুপুরে পরিবারের সকলে মিলে ভোট দিতে আসেন আনিসুরেরা। তবে ভোট আর দেওয়া হয়নি পেশায় টোটো চালক আনিসুরের।
রবিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, শোকে বিহ্বল পরিবার। স্ত্রী রোজিনা বলেন, “আমাদের কী হবে এ বার? ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোথায় যাব? কী ভাবে ওদের লেখাপড়া করাব? কী ভাবে সংসার চলবে, কিছুই বুঝতে পারছি না। এই ভোটের কী দরকার? যেখানে সাধারণ মানুষের জীবনের কোনও দাম নেই।”
আনিসুরের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় আশরাফুল অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। হাসিবুর ও আনিসা ষষ্ঠ ও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। বাবার মৃত্যুতে তারাও শোকস্তব্ধ। আশরাফুল বলে, “বাবা যে আর নেই, ভাবতেই পারছি না। উনিই আমাদের পরিবারে একমাত্র রোজগেরে মানুষ ছিলেন। আমাদের আর পড়াশোনা হবে কি না বুঝতে পারছি না।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাজা গাজি বলেন, ‘‘দোষীদের গ্রেফতার করতেই হবে। আমরা পরিবারের পাশে আছি।’’ এলাকার যুব তৃণমূল নেতা আমানুল্লা লস্করের কথায়, ‘‘এই ঘটনায় যুব তৃণমূল জড়িত নয়, এটা আইএসএফের কাজ। দলের কর্মীর মৃত্যু আমাদের কাছে বেদনার।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইএসএফ নেতৃত্ব।
পরিবারের তরফে ইতিমধ্যে ৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। রমেশ সর্দার নামে এক স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসডিপিও ক্যানিং দিবাকর দাস বলেন, “বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”