প্রতীকী ছবি।
সংক্রমিতের সংখ্যা কমছে। কিন্তু তাতে বিপদ কি কমছে?
বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে এই প্রশ্নই। তাঁরা বলছেন, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমছে ঠিকই, কিন্তু গত দু’সপ্তাহে সংখ্যাটা যে ভাবে ওঠানামা করছে, তাতে বিপদ বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে ষোল আনা। জানুয়ারি থেকে আক্রান্তের সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে কমার পরেও গত কয়েক দিনে ফের বেড়ে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য কর্তাদের কপালে।
গত বছরের জুন মাসের শুরুতে কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যত ছিল, এ বছর ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আক্রান্তের সংখ্যাটা কাছাকাছি। কিন্তু অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা সেই সময়ের থেকে এখন বেশি। অর্থাৎ, সুস্থতার হার জুন মাসের তুলনায় কম। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, অতিরিক্ত গা-ছাড়া মনোভাবই ফের বিপদ ডাকছে।
ব্যারাকপুর থেকে বারাসত, এমনকী, খাস কলকাতাতেও মাস্ক না পরাই কার্যত দস্তুর হয়ে গিয়েছে। গণপরিবহণেও এ নিয়ে নজরদারি নেই বলে অভিযোগ। এ দিকে, করোনার নতুন স্ট্রেন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। মহারাষ্ট্রে নতুন করে দুই জেলায় লকডাউন হয়েছে। কেরলে আক্রান্তের হারও চিন্তায় ফেলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রককে।
এরই মধ্যে এই রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের পরিসংখ্যান যে স্বস্তি এনেছিল, একটু সাবধানে চলাফেরা করলেই তা বজায় থাকবে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কারণ, গত মে মাসের পরে এই প্রথম কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা এক হাজারের কাছাকাছি রয়েছে। উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
গত ১ অগস্ট কলকাতায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৪৮৫ জন। কাছাকাছি ছিল উত্তর ২৪ পরগনাও। ১ সেপ্টেম্বরে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যায় উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়িয়ে গিয়েছিল কলকাতাকে। উত্তর ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ছিল ৪৮৭৬। আর কলকাতায় ৪৬৯০ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ওই সময়ে দেড় হাজারের কাছাকাছি ছিল।
পুজোর পরে অনেকটা বেড়ে গেলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এই তিন জেলায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে। আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকে তিন জেলাতেই। ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ১১০৮ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় তা নেমে যায় হাজারের নীচে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংখ্যাটা ছিল ২৪১।
রাজ্যের এক স্বাস্থ্য কর্তা বলছেন, “এই তথ্য নিশ্চিত ভাবে স্বস্তির। কিন্তু গত কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ফের ঊর্ধ্বমুখী।”
উত্তর ২৪ পরগনাতেও গত দশ দিনে আক্রান্তের সংখ্যার হেরফের হয়েছে। কোনও দিন আক্রান্ত হচ্ছেন ৩৯ জন। আবার পরের দিনেই সেই সংখ্যা ৬০ ছাড়াচ্ছে। বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় আসেনি। অসচেতন হলে ফের তার মাসুল দিতে হবে। সব বিধি মেনে চলতে হবে।’’